পার্বত্য অঞ্চলে শান্তিচুক্তি অক্ষরে অক্ষরে পূরণ করা হবে-ওবায়দুল কাদের

মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬, ০৮:৩২:৫৬
পার্বত্য অঞ্চলে শান্তিচুক্তি অক্ষরে অক্ষরে পূরণ করা হবে-ওবায়দুল কাদের
খাগড়াছড়িঃ-সড়ক ও সেতু মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির প্রতিটি বিষয় অক্ষরে অক্ষরে দাবী পূরণ করা হবে। এছাড়া বর্তমান সরকারের সময়ে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ৯০ ভাগ বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি পাহাড়ে পরিপূর্নভাবে চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ভূমি কমিশন আইনের সংশোধনী পাস হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিনের ভূমি জটিলতার নিসরন হয়ে পার্বত্য অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত সমাবেশে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, বিএনপি-জামাত আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিদেশি প্রভূদের কাছে নালিশি রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে।
রামগড় বাসটার্মিনাল চত্বরের সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সদস্য দীপংকর তালুকদার, খাগড়াছড়ি আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, ফিরোজা বেগম চিনু এমপি প্রমূখ।
পরে মন্ত্রী রামগড় সোনাইপুলে নির্মানাধীন একটি সেতু পরিদর্শন করেন। অন্যদিকে বিকেলে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজিত পৃথক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
গতকাল মঙ্গলবার এবং সমাবেশে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হাজার জনতার সামনে সমাবেশে বলেছেন, বর্তমান সরকার সারা দেশে উন্নয়নের কান্ডারি হিসাবে দেশের আপময় জনগণ এ উন্নয়নের কারণে দেশের মানুষ বুঝতে পেরেছে যে আওয়ামীলীগ সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী। যারা এদেশে খুন খারাবি, রাহাজানি, জগীদের মদত দিচ্ছে তারা এদেশের শক্রু। বিএনপিকে দুশারফ করে বলেছেন, বর্তমান দেশে শান্তি পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অশান্তির রাস্তা ছেড়ে শান্তির পথে আসুন, জনগণের আস্তা অর্জন করুন। বসন্তের কোকলের মত কাজ করবে না। ডাক দিলে আসবেন, না হয় আসবেন, এ অভ্যাস ছেড়ে দিন। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়ন হচ্ছে, ধারাবাহিক ভাবে উন্নয়ন চলবে, ধাপে ধাপে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে খাগড়াছড়ি জেলার ৮টি থানা থেকে জীপ, কোস্টার যোগে হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেয়। দীঘিনালা, পানছড়ি, লক্ষীছড়ি, রামগড়, মাটিরাঙ্গা, মহালছড়ি, গুইমারা। গতকাল খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে হাজার জনতার ভিড় ছিল। খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম এর হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়। অপরদিকে সংসদ এমপি গ্রুপ একই ভাবে সমাবেশে যোগ দিয়েছে কিন্তু কোন আপত্তিকর ঘটনা ঘটেনি। নিরাপত্তাবাহিনীর তৎপরতা জোরদার ছিল।
এদিকে দেশের জননেত্রী ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে’ মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন এ সরকারের আমলেই পার্বত্য শান্তিচুক্তির কারণে মানুষ আজ শান্তিতে ঘুমাতে পাচ্ছেন এবং প্রতিটি ধারা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করা হবে জোর দিয়ে বলেছেন। পাহাড়ী জনপদের মানুষকে পিছিয়ে থাকতে দেয়া হবে না। অন্ধকারে আলো অবশ্যই আসবে। চলাচলের জন্য রাস্তা হবে, চলতে থাকবে উন্নয়ন প্রক্রিয়া। উন্নয়নের মাধ্যমে পার্বত্য এলাকার দারিদ্রতাকে যাদুঘরে পাঠানো হবে।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে সংবর্ধনা জনসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী আরও বলেন, খাগড়াছড়ির সবকটি রাস্তার উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষ। শুধু মাত্র মহালছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়ক বাকী আছে। এ কাজও দ্রুত করা হবে। এর মধ্যে খাগড়াছড়িতে ১৮ ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ, ৩৪টি ব্রীজের কাজ চলছে। পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়নের জন্য সরকার বদ্ধ পরিকর।
এ সময় মন্ত্রী বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি করেও ক্ষমতায় আসতে না পেরে বিএনপি এখন বিদেশীদের কাছে নালিশের রাজনীতি করছে। তবে নিজ দলের নেতা কর্মীদেরও বলতে ছাড় দেননি ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কলহ-কোন্দল করে দলে থাকার কারও অধিকার নেই। নির্বাচন পরবর্তী দলের কোন্দল সৃষ্টি করলে আর ক্ষমা করা হবে না।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য দীপংকর তালুকদার, রাঙ্গামাটির মহিলা সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যন কংজরী চৌধুরী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জাহিদুল আলম, দিদারুল আলম, খাড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম ঐ সময় উপস্থিত ছিলেন।
mongsai79@gmail.com

Comments