- Get link
- X
- Other Apps
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলায় র্যাবের তিন কর্মকর্তাসহ মোট ৩৫ জনকে সাজা দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে র্যাবের সদস্যই ২৫ জন। আজ সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত ২৬ জনকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দণ্ড পাওয়া ৩৫ জনের মধ্যে ২৫ জনই র্যাব-১১-এর সাবেক সদস্য। তাঁদের মধ্যে র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক তারেক মোহাম্মদ সাঈদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানাসহ ১৬ জন র্যাব সদস্যের ফাঁসির দণ্ড হয়েছে। বাকি নয় জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।
র্যাবের অধিনায়ক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্যে এর আগে চট্টগ্রামের র্যাব-৭-এর অধিনায়ক জুলফিকার আলী মজুমদারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর মামলাটি চট্টগ্রাম আদালতে বিচারাধীন আছে। ২০১১ সালের ৪ নভেম্বর চট্টগ্রামে তালসারা দরবার শরিফের প্রায় ২ কোটি টাকা লুটের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাহিনী থেকে জুলফিকারকে চাকরি হারাতে হয়। গ্রেপ্তারও করা হয় তাঁকে।
দ্বিতীয় বৃহত্তম রায়: বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলা ছাড়া এক মামলায় একসঙ্গে ২৬ জনকে ফাঁসি দেওয়ার ঘটনাও নিকট অতীতে নেই বলে জানিয়েছেন নিম্ন ও উচ্চ আদালতের কয়েকজন আইনজীবী। বিডিআর বিদ্রোহের সময় সংঘটিত হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বিডিআরের তিন শতাধিক সদস্যকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া নাটোরের আওয়ামী লীগ নেতা গামা হত্যা মামলায় নিম্ন আদালত ২১ জনকে ফাঁসির দণ্ড দেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার জানা মতে, এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রায়। যেখানে ২৬ জনকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার সাজাপ্রাপ্ত র্যাব সদস্যদের মধ্যে ১৭ জন কারাগারে আছেন। তাঁরা হলেন চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা, হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দ বালা, করপোরাল রুহুল আমিন, এএসআই বজলুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিন, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনস্টেবল বাবুল হাসান ও সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর। আর পলাতক আটজন হলেন করপোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল হাবিবুর রহমান।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ। পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।
ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় ১১ মে একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। এই মামলার বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। পরে দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে পুলিশ।
mongsai79@gmail.com
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment