ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় কে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ নেতা কর্তৃক মানহানি


রাজিব আহমেদ
ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ বিভ্রান্তিমূলক,প্রতিহিংসা রাজনৈতিক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সামাজিক নন ইস্যুকে ফায়দা বানিয়ে প্রকাশ্যে পরিবেশ ঘোলাটে করতে চাইছে কয়েক গুটি ব্যক্তি ।

সম্প্রতি ফেসবুকে দেখা যায়, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের নেতাবৃন্দরা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় ফ্যামিলির উপর মানহানিকর পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে উঠে পড়ে লেগেছে ।শুধু তাই নয়, প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে বাংগালি ছাত্র পরিষদ ও ডিজিএফআই কর্তৃক প্রভাবিত তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অনলাইন পত্রিকায় চাকমা চিফ সার্কেল রাজা দেবাশীষ রায়ের পরিবার বর্গদের মর্যাদা হানি করার কাজে লিপ্ত রয়েছে গুটি কয়েক সদস্য ।

গতকাল ফেসবুকে দেখা যায় রাঙ্গামাটির বিএনপির(পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের) নেতা জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে হুমকি দিচ্ছে । এছাড়া পার্বত্য গুটি কয়েক সেটেলার ছাত্র পরিষদের নেতারা তার ফেসবুক স্টাটাসের উপর একধরনের মদদ দিচ্ছে ।

অনেকদিন হলো লক্ষ্য করা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন উস্কানিমূলক তথ্য উপস্থাপন করে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অপপ্রচার চালাচ্ছে ।

এছাড়া গত সোমবার খাগড়াছড়ি কলেজে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে সেটলার ছাত্ররা অতর্কিতে হামলা চালিয়ে সোনাক্কো চাকমা ও সুখময় চাকমা নামে কলেজের একাদশ শ্রেণীর দুই পাহাড়ি ছাত্রকে মারধর করে।

এ ঘটনা জানাজানি হলে পাহাড়ি ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয় এবং তারা এর প্রতিবাদ জানায়। পরে কলেজের শিক্ষকরা বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়ার চেষ্টা চালায়। কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা চলাকালে বহিরাগত একদল সেটলার সংঘবদ্ধ হয়ে কলেজে ঢুকে পাহাড়ি ছাত্রদের উপর হামলার চেষ্টা চালালে পাহাড়ি ছাত্ররাও সংঘবদ্ধ হয়ে এর প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেটলারদের নেতৃত্ব দেয় খাগড়াছড়ি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর মোঃ মাসুম রানা।

পরে খাগড়াছড়ি সদর জোনের জোন কমান্ডার লে.কর্ণেল সোহাগ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় লে. কর্ণেল সোহাগ উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করেন। এতে তিনি নানা কথা বলার ফাঁকে বাংলাদেশে ‌’আমরা সবাই বাঙালি’ বললে পাহাড়ি ছাত্ররা ‘আমরা বাঙালি নই’ বলে তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

এরপর একদল সেটলার সাম্প্রদায়িক হামলার উদ্দেশ্যে পাহাড়ি গ্রাম কলেজ পাড়ার দিকে ঢুকার চেষ্টা করলে পাহাড়ি ছাত্র-যুবকরা তাদের প্রতিরোধ করে। পরে পুলিশ এসে সেটলারদের সরিয়ে নেয়।  পরে একদল সেনা সদস্য কলেজ পাড়া এলাকায় ঢুকে প্রতিরোধকারী পাহাড়ি ছাত্র-যুবকদের ধাওয়া করে।

উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেটলাররা বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ি ছাত্রদের উপর হামলা চালিয়েছিল। তারা মহাজন পাড়ায় শ্যামল কান্তি ত্রিপুরা নামে এক পাহাড়ি ছাত্রকে মারধর করে মাথা ফেটে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

এবার পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ কর্তৃক সেদিনের হিংসাত্মক ঘটনা পুনারাবৃত্তি করা যাক,
গত মাসে প্রথম অালো পত্রিকায় অাগুন দিয়েছে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের কর্মীরা এসএম মাসুম রানার অভিযোগ থেকে জানা যায়, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ কর্তৃক চাঁদাবাজি রিপোর্ট তুলে ধরার কারণে তারা এখনো সেটা মানতে নারাজ ।এছাড়া পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ কর্তৃক বিবৃতি দেওয়া অনুসারে বুজাতে চেয়েছেন, তারা চাঁদাবাজি  করেনা , চাঁদাবাজিতে তারা লিপ্ত নয় ।

এদিকে ১২ তারিখ প্রথম আলো রিপোর্ট এ সরিজমিনে এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে , পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের নেতারা চাঁদা তুলে কিনা জানতে চাইলে , প্রথম আলোকে দেওয়া তথ্যমতে পানছড়ি শহরতলীর সেটেলার বাসিন্দা ইকরাম (ছদ্মনাম) বছরখানেক আগেও দিনমজুরি করতেন। এখন বাঙালি ছাত্র পরিষদের চাঁদা তুলে দেওয়ার কাজ নিয়েছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, এই কাজে পরিশ্রম কম, আয় বেশি। চাঁদা কাদের কাছে চাওয়া হয়েছে, কে কত দেবেন, তা তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তিনি নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে সেটা তুলে নেতাদের কাছে পৌঁছে দেন। এই তাঁর কাজ।

বাঙালি ছাত্র পরিষদের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের দুটি গ্রুপেরই স্থায়ী উপদেষ্টা একজন। এ ছাড়া আরও চারজন বিভিন্ন সময় তাঁদের উপদেশ-পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নাম প্রকাশ না করে তাঁরা বলেন, এই চারজনই খাগড়াছড়ির সবার পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। চাঁদাবাজি বন্ধ করতে প্রশাসনের ভূমিকা জানার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে জানা গেছে, এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো কার্যক্রম নেই। তবে তাঁরা গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে চাঁদাবাজির ব্যাপকতা সম্পর্কে জানাশোনা অনেক কথা বলে থাকেন।

মূলত তারা নিজেদের অপকর্ম গুলো এতদিন বিভিন্নভাবে ধামাচাপা দিয়ে আসছিল । কারণ তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনমতকে বিভান্ত্র করার জন্য, সংবাদ প্রকাশে বাধা-নিষেধ, অপপ্রচারনায় ভাড়াটে সাংবাদিক এবং ভূঁইফোড় স্থানীয় প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকা চালুকরণ, সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে ভিত্তিহীন ইতিহাস অবতারনা করে, সাম্প্রদায়িক উস্কানী দিয়ে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ধোঁয়া তুলে ঘৃণ্য তথ্য সন্ত্রাসে এসব গোষ্ঠী মরিয়া হয়ে উঠছে।
এদিকে উস্কানি ও হুমকি দাতার সম্পর্কে সরেজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, তার বাড়ি রাঙ্গামাটি সদরে মানিকছড়ি জেলা পিক ফার্ম এলাকায় ।তার ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাঙালি মুদি দোকানদার জানান, এই নেতার বাড়ি সাপছড়ি ব্রিক ফিল্ড এলাকায় । সাপছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ক্লাশ ৪ পাশ করে সে । অনেক বছর আগে তার পিতা (সুফি)মারা যাওয়ার পর তার পড়াশোনা তেমন উচ্চ পর্যায়ে হয়নি । সেজন্য তিনি বাবার গড়ে দেওয়া রুতির দোকানে ও অনেক বছর কাজ করেছেন।

মানিকছড়ির গাছ ব্যবসায়ী এক কন্ডাক্টরের সাথে তার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বাবা অনেক সৎ ও ধার্মিক ছিলেন। পিতা মারা যাওয়ার পর পুত্র জাহাঙ্গীর আলমকে পুরো পরিবার দেখাশোনা করতে হতো । কিন্তু হঠাৎ বিএনপির অঙ্গসংগঠন দলীয়দের সাথে রাজনৈতিক দলে পা বাড়ায় এই নেতা ।বর্তমানে তিনি রাঙ্গামাটি জেলা পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের ছাত্রলীগের উচ্চপদস্থ মর্যাদায় রয়েছে বলে জানা যায়।

পরিশেষে,পাহাড়িদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলতে চাই, আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে প্রকাশ্যে উস্কানি দাতাদের আইনের সহায়তায় প্রতিহত করুন । একজন উচ্চ পর্যায়ের সম্মানীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে কিভাবে সে প্রতিনিয়ত হুমকি ও উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে । এটা সামাজিকভাবে প্রতিহিংসামূলক একধরনের বিতর্ক । আমরা চাই সম্প্রীতির বন্ধন।সামাজিক ইস্যুকে ফায়দা বানিয়ে সাম্প্রদায়িক পুরনো দিনের ঘটে যাওয়া দাঙ্গা হামলা আর ২য়বার দেখতে চাইনা। সুতরাং সচেতন হওয়ার পালা এখন থেকে আমার আপনার সবারই।সামাজিক উস্কানি থেকে সৃষ্টি হতে পারে অপ্রত্যাশিত নরকীয় হামলা । পাহাড়ীদের উপর ছুড়ে মারা পুরোনো দিনের নরকীয় ধংস যোগ্য ইতিহাস আজ তুলে ধরলাম না । প্রয়োজনে ভবিষ্যতে তুলে ধরা হবে । ভালো থাকুন সবাই।
https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA mongsai79@gmail.com

Comments