লামার লুলাইন বাজারে সমাবেশ উচ্ছেদ–আতঙ্কের কথা পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীকে জানালেন ম্রোরা

Image result for bangladesh mro indiginias  imageবান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ম্রোরা উচ্ছেদ-আতঙ্কে রয়েছেন বলে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরকে জানিয়েছেন। পাহাড়ি ম্রো জনগোষ্ঠীর লোকজন প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, বহিরাগতরা এলাকায় ভূমি দখল করছে। ভিটেমাটি থেকে তাঁদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র চলছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার লামার সরই ইউনিয়নের লুলাইন বাজারে ম্রো সমাবেশে যোগ দেন প্রতিমন্ত্রী। বেলা ১১টায় লুলাইন বাজারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন সেনাবাহিনীর আলীকদম জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুবুর রহমান, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হারুনুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান, লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল। সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিংয়ং ম্রো।
সমাবেশে লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ভূমি দখল ম্রোদের জন্য একটি বড় সংকট। এ সংকট থেকে তাঁদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। না হলে তাঁরা টিকে থাকতে পারবেন না।
এর আগে সকালে জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে সরই ইউনিয়নের লুলাইন বাজারে ম্রো সমাবেশে যাওয়ার পথে ইউনিয়নের ঢেঁকিছড়া পুলা আগাপাড়া, লেমুপালং রাস্তার মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে শত শত ম্রো নারী-পুরুষ প্রতিমন্ত্রীকে ঘিরে ধরেন। তাঁরা ভূমি দখল ও দখলদারদের অত্যাচার-উৎপাতের কথা তাঁকে জানান। তিনি ম্রোদের কথা শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
ঢেঁকিছড়া পুলা আগাপাড়ার বাসিন্দারা প্রতিমন্ত্রীর কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানির লোকজন জুমে বীজ বপন, বাগান সৃজনে তাঁদের বাধা দিচ্ছেন। অথচ পাড়ার আশপাশের পাহাড়ি জমিতে তাঁরা বংশপরম্পরায় জুমচাষ করে আসছেন।
এ বিষয়ে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক কামালউদ্দিন বলেন, তাঁরা যখন ঢেঁকিছড়া পুলা আগাপাড়ায় জমি ইজারা নিয়েছেন, তখন সেখানে ম্রো পাড়া ছিল না। ম্রোরাই তাঁদের ইজারা নেওয়া জমি দখল করে পাড়া করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
লুলাইন বাজারের পাশে লুলাইনমুখ এলাকার একটি বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি চংলগ ম্রো সাংবাদিকদের বলেন, আট-নয় বছর আগেও লুলাইনমুখে ২৫ পরিবার নিয়ে একটি ম্রো পাড়া ছিল। পরে মকবুল আহমদ নামের এক ব্যক্তি পাড়াটি দখল করে নেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপর সেখান থেকে ম্রোদের উচ্ছেদ করা হয়।
এ বিষয়ে মকবুল আহমদ বলেন, তিনি কারও জমি দখল করেছেন এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারলে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেবেন।
ম্রো সমাবেশে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, নিরীহ ও দরিদ্র ম্রোরা যেখানে যে অবস্থায় রয়েছেন, সে অবস্থায় তাঁরা থাকবেন। জুমচাষ ও বাগান করবেন তাঁরা। কেউ তাঁদের উচ্ছেদ করতে পারবে না। কেউ ম্রোদের জমি দখল করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
mongsai79@gmail.com

Comments