মহা দোয়ারা নিকায়ের মহাসংঘনায়ক ভদন্তঃ উইজিয়া মহাথের ভান্তে ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত আলো রানী চাকমা।

১। লংগদুতে অসহায় ২৩৫টি পরিবারের হাজার হাজার অসহায় মানুষ।
২। মহা দোয়ারা নিকায়ের মহাসংঘনায়ক ভদন্তঃ উইজিয়া মহাথের ভান্তে।
৩। ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত আলো রানী চাকমা।
(১) গত ২রা জুন সেটেলারদের আগুনে পুড়ে যাওয়া লংগদুতে ২৩৫টি পরিবার এখন খুবই অসহায়। তাদের মধ্যে আছে আরও ২শতের মত শিক্ষার্থী, যাদের পাঠ্য বই ও বিদ্যালয়ের ড্রেসসহ বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী সম্পূর্ণ ভষ্মিভূত হয়ে যায়। যদিও ১৮তারিখ প্রথম ধাপের মত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে এসেছি। কিন্তু ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে আমি সস্তি মনে ফিরে আসতে পারিনি। কারণ ওখানে ধানের আড়ত গুলোতে এখনো আগুন নিঁভেনি। বেশিরভাগ লোক এখনো গ্রামে ফিরে আসেনি। যারা ফিরে এসেছেন তাঁরাও আছেন আশ্রয়হীনতায়। বাসস্থান বিহীন হয়ে আছে ২৩৫টি পরিবারের মানুষ। শিক্ষার্থীরাও আছে শিক্ষা সামগ্রী বিহীন।
(২) কক্সবাজার এলাকায় মহা দোয়ারা নিকায়ের মহাসংঘনায়ক ভদন্তঃ উইজিয়া মহাথের, গ্রামঃ হারবাং। বয়সঃ ৯৬ বছর, বর্ষাবাস ৭৬ বর্ষ। তিনি খুবই বিনয়শীল ও কর্ম বিপাক বিশ্বাসী কুলপুত্র। যার জন্য রোগটি শুরু হওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসা করাতে পারেন নাই উপাসক ও উপাসিকারা। ভান্তের একটাই কথা "যা হচ্ছে আমার অতীত কর্মের কারণে হচ্ছে, কেউ সুস্থ করাতে পারবে না'। যতবার ওনাকে চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে, প্রতিবারই তিনি একিই কথা বলেছেন। যার কারণে এখন রোগটি ভান্তের জীবনটাকে গ্রাস করে বসতে সুযোগ পেয়েছে। তবুও উপাসক উপাসিকারা স্থানীয় ডাক্তারদের মাধ্যমে এক ধরণে জোর করে অনেক চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু শহরে এসে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারেন নাই। কারণ ভান্তে রাজি ছিলেন না। পরে উপায় না দেখে গ্রামের উপাসক ও উপাসিকারা আমার দাড়স্থ হয়েছেন। কারণ ওনারা দেরীতে হলেও জানতে পেরেছেন যে, ভান্তে আমাকে প্রচন্দ ভালোবাসেন, বিশ্বাস করেন, ভরসা করেন। হয়ত চিকিৎসার জন্য একমাত্র আমিই ভান্তেকে রাজি করাতে পারব। হ্যা, অনেক চেষ্টা ও অনুরোধের প্রেক্ষিতে ভান্তের জীবন শেষ প্রান্তে এসে হলেও আমরা সম্মিলিতভাবে ভান্তেকে রাজি করাতে পেরেছি। এক প্রকার আমি ভান্তেকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজি করিয়েছি। বলেছি আপনাকে কোন চিন্তা করতে হবে না, সবকিছু আমিই ব্যবস্থা করেছি। কারণ এরকম না বললে ভান্তে চিকিৎসার খরচ নিয়ে খুব চিন্তিত থাকতেন এবং শহরে এসে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য রাজিও হতেন না। কারণ এত টাকা খরচ করে চিকিৎসা করার মত উপাসকদেরও সামর্থ ছিল না। তবুও সবকিছু উড়িয়ে দিয়ে ভান্তেকে শহরে এনে একটা প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করে ডাক্তার দেখানো হয়েছে। ডাক্তার বেশ কয়েকটা পরীক্ষা করতে দিয়েছেন। সব পরীক্ষার রিপোর্ট পেলেও একটি পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও দশদিন। যে পরীক্ষার রিপোর্টগুলো পেয়েছি সেগুলো দেখে ডাক্তার বলেছেন নরমাল। অর্থাৎ যেখানে আপনারা ক্ষত অবস্থায় একটা বড় ফোরা/বিচি দেখছেন সেটার মাংসের রিপোর্ট ক্যান্সার কিনা নিশ্চিত না হওয়ার পর্যন্ত কোন কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ক্যান্সার যদি না হয়, তাহলে চিন্তার কোন কারণ নাই বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। নির্দিষ্ট চিকিৎসা করালেই সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। ডাক্তার আরও জানিয়েছেন এই দশদিন ভান্তেকে উন্নতমানের ইনজেকশন ও বিভিন্ন ঔষধ পত্র দিতে হবে। যার খরচ দশদিনে প্রায় এক লক্ষ টাকার অধিক হবে। কিন্তু এত টাকা আমি কোথায় পাবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না! এর মধ্যে বিভিন্ন পরীক্ষায় বিশ হাজারেরও টাকা বেশি খরচ হয়ে গেছে। রক্ত শূণ্যতার কারণে রক্তও দেওয়া হয়েছে। রক্ত আরও বেশ কয়েক ব্যাগ লগবে বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। জানি না এখন আমি কি করব!
(৩) পার্বত্য ত্রাণ তহবিল কমিটি থেকেও আমার সহায়তা চাওয়া হয়েছে ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত আলো রানী চাকমা'র চিকিৎসার জন্য। কমিটি থেকে জানিয়েছেন ওনারা অনেক চেষ্টা করেও চিকিৎসার পর্যাপ্ত টাকা তাঁরা উত্তোলন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। দেশে বিদেশে আমার পরিচিত থাকার কারণে নাকি এনারা আমার সহায়তা চাইছেন এবং মানুষ নাকি আমাকে প্রচন্দ বিশ্বাস করেন এবং ভালোবাসেন মানবিক কাজের জন্য। তবে মানুষ আমাকে কতটুকু বিশ্বাস করেন এবং ভালোবাসেন সেটা কিন্তু আমার অজানা। কারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা ও ভালোবাসা পাবার মত আমি তেমন কিছু এখনো মানুষকে উপহার দিতে পারিনি। তবুও আমি সবার প্রতি উদাত্ত আহবান করছি, কোন হৃদয়বান ব্যক্তি বা সেচ্ছাসেবী সংগঠন মানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে চাইলে নিচে দেওয়া আমার মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ রইল।
বিদ্রঃ মহাসংনায়ক ভান্তে এখন চট্টগ্রাম রয়েল হসপিটাল ৩য় তলা, ৩১০নাম্বার রুমে রয়েছেন। সবার প্রতি অনুরোধ করছি একজন বিনয়শীল কুলপুত্র ভান্তের চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসার জন্য।
যোগাযোগ
উ জ্যোতিসারা ভিক্ষু
০১৮১৯৬৬৫৫৪৯
mongsai79@gmail.com

Comments