সুয়ালকে আবাদি ফসলসহ কৃষকের ৪২ একর জমি দখল!

বান্দরবান অফিস:  বান্দরবানের সুয়ালকে এক কৃষকের আবাদকরা ফসলসহ প্রায় ৪২ একর জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে এসব জমি দখল করে নেয় বলে কৃষকরা জানান। শেষ সম্ভল জমি ও ফসল হারিয়ে দিশাহার হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
অভিযোগে জানা যায়, সুয়ালক ইউনিয়নে ৩১৪নং সুয়ালক মৌজায় হরিণ মারা এলাকায় চিংশৈ নু মারমা এর ৮৪নং খতিয়ানে ৪০শতক প্রথম শ্রেণির জমি রয়েছে। একই খতিয়ানে ক্যথোয়াই মগ এর নামে রয়েছে ১একর ১০শতক। এছাড়া নুমে মারমানী ৬০শতক এবং ¤্রানুচিং মারমা গণের নামে ১একর ১০শতক প্রথম শ্রেণির জমি রয়েছে। এসব জমি বান্দরবানের চিহ্নিত নজির আহম্মদ নামের প্রভাবশালী এক ব্যক্তি ভাড়াটে লোক দিয়ে দখল করে নেয়।
বর্গা চাষি সাবেকুন নাহার (৩৫) জমিতে আবাদি ফসল দেখিয়ে বলেন, দীর্ঘ ১৬বছর যাবত ¤্রানুচিং মারমা এর জমিতে বর্গা চাষী হিসেবে চাষাবাদ করে আসছি। চলতি বছরের ২২শে মে সকাল বেলায় হঠাৎ ভূমি দখল করতে পুলিশ হাজির হয় নজির আহম্ম। এ সময় পুরুষ ও মহিলা দুই গাড়ি পুলিশ, ৫০-৬০ জন ভাটাটে লাঠিয়াল ছিল। এসব লাঠিয়ালের হাতে ধারালো দা, লাঠি-সোটা ও দেশিয় অস্ত্র ছিল বলে সাবেকুন নাহার জানান। ওই সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে জমি দখল করে নেয় নজির আহম্মদ।
সাবেকুন নাহার কান্না জড়িক কন্ঠে বলেন, আমরা অসহায়। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বর্গা জমিতে শশাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেছি। আমার আবাদকরা সব শস্য এখন জমিতেই পচে নষ্ট হচ্ছে। আমি ক্ষেতে যেতে পারছিনা। এনজিও আমার পিছ ছাড়ছে না। কি করে এনজিও থেকে  নেয়া ঋণ পরিশোধ করব। আমি যাব কোথায়! আমার সব শেষ হয়ে গেছে।
সাবুকু নাহারের বড় ছেলে মোহাম্মদ নাছির জানায়, আমাদের বর্গা চাষের জমিতে প্রতি বারের মতো এবারও শশার ভাল ফলন হয়েছে। একই সাথে অন্যান্য সবজিও রয়েছে। অথচ নজির আহম্মদ নামের এক ব্যক্তি ৫০/৬০ জন লোক নিয়ে এসে আমাদের আবাদকৃত খেতে নতুন করে চারা রোপন করেছে। আমাদের কড়া নিষেধ করে গেছে যাতে ওই জমিতে আর না যাই। আমরা এখন কী করব। তারা লাঠি- সোটা নিয়ে মাঝে মধ্যেই আসে। ভয়-ভীতি দেখায় আমাদের। তাদের ভয়ে জমিতে চাষ বন্ধ করে বসে আছি ঘরে। আমরা কি খাব।
স্থানীয় বাসিন্দা খিবো মারমা অভিযোগ করে বলেন, নজির আহম্মদ একজন চিহ্নিত ভূমিদস্যু। নিরীহ উপজাতিদের জমি বিভিন্ন কলাকৌশলে কেড়ে নেয়ার অভ্যাস তার পুরোনো।
সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা জানান, নজির আহম্মদ নিরীহ পাহাড়ি এর শশাক্ষেতসহ জমি বেদখল করে নিয়েছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে এলাকায় অনেক নিরীহ উপজাতির জমি প্রভাব খাটিয়ে দখলের অভিযোগ আছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে নজির আহম্মদ বলেন, তার জমির কাগজ পত্র আছে। কাগজ-পত্রের মূলে জমি দখল নেয়া হয়েছে। কাছে গিয়ে কাগজ-পত্র দেখে যেতে বলেন নজির আহাম্মদ।
বান্দরবান জেলা প্রশাসনের সার্ভেয়া মুজিবুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশেই নজির আহম্মদের জমি পরিমাপ করে দিয়েছি। এখানে আমাদেও কিছু করার নেই।
mongsai79@gmail.com

Comments