টেকনাফের আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে কমান্ডারকে হত্যা অস্ত্র লুট করেছে রোহিঙ্গা ডাকাত

গত বছরের ১৩মে টেকনাফের আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে আনসার কমান্ডারকে হত্যা করে ১১টি অস্ত্র ও ৬৭০টি বুলেট লুট করেছিল একদল রোহিঙ্গা ডাকাত। মঙ্গলবার ভোরে উখিয়া সীমান্তের ঘুমধুমের তুমব্রুর পুরানপাড়া সংলগ্ন গহীন অরণ্য থেকে লুট হওয়া ৫টি অস্ত্র ও ১৮৯ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে র‌্যাব। একই সঙ্গে সোমবার রাত ১০টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলা এ অভিযানে ঘটনার মূলহোতা সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।
এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৫টি বন্দুক ও ৩০ রাউন্ড কার্তুজও উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে একই এলাকায় র‌্যাবের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের ডিজি বেনজির আহমেদ বলেন, টেকনাফে আনসার হত্যা ও লুটের ঘটনার অন্যতম হোতা মিয়ানমারের নাগরিক খাইরুল আমিন (বড়) ও মাস্টার আবুল কালাম আজাদকে সোমবার রাত ১০টায় কুতুপালং ক্যাম্প থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।
এসময় তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শ্যুটার গান এবং গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যমতে তুমব্রুর পুরানপাড়ার হাসান আহমদকে গ্রেফতার করা হয়। হাসানের দেওয়া তথ্যমতে গহীন অরণ্যে দুটি গর্ত থেকে বাকি অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত বছরের ৩০ জুন হামলার ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ওই সময় টেকনাফের নয়াপাড়া শরনার্থী ক্যাম্পের ডি ব্লকের ৫নং কক্ষের বাসিন্দা মৃত জালাল আহমেদ ছেলে রফিক প্রকাশ মামুন মিয়া (৩০), একই ক্যাম্পের ই ব্লকের ৩নং কক্ষের বাসিন্দা মৃত বাছা আলীর ছেল আব্দুর রাজ্জাক (২৫) (বর্তমানে চট্টগ্রামের হালিশহরের সবুজবাগ এলাকায় বসবাস করেন), আব্দুর রাজ্জাকের ভাই আব্দুস সালাম (২৯), সি ব্লকের ৩নং কক্ষের বাসিন্দা মৃত ফজল আহমদের ছেলে মো. হারুন, সি ব্লকের ২নং কক্ষের মৃত আমির হামজার ছেলে জয়নাল প্রকাশ জানে আলম (৫০) গ্রেফতার করা হয়।
তখন গ্রেফতার হওয়া রফিক প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছিল, টেকনাফের আনসার ব্যারাকে হামলার পর লুট করা অস্ত্রগুলো ৩টি বস্তায় ভরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের নাগরিক আব্দুর রাজ্জাক, খায়রুল আমিন ও নুর আলম। এর আগে আনসার কমান্ডার আলী হোসেনকে গুলি করে খুন করে খায়রুল আমিন। এই তিন জনের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাকসহ ৫ জন মিয়ানমারের নাগরিককে বৃহস্পতিবার গভীররাতে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।
আব্দুর রাজ্জাক জঙ্গি সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সাথে জড়িত এবং পেশাদার অস্ত্র ব্যবসায়ী। সে অর্থের লোভ দেখিয়ে আনসার ক্যাম্পে হামলার জন্য ১৫ থেকে ১৭ জন সন্ত্রাসীকে একত্রিত করে। এরকম একাধিক গ্রুপের অধীনে একেকজন একেকভাবে আনসার ক্যাম্পে হামলায় অংশ নেয়। হামলাকারীরা সকলে সকলকে চিনতো না।
আনসার ব্যারাকে হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে নুরুল আবছার (২২) নামে এক ব্যক্তিকে গত বছরের ৩০ মে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন সে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আনসারের ডিজি মিজানুর রহমান খান।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৩ মে দিবাগত রাত ২টায় টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া শরনার্থী ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অবস্থিত আনসার ব্যারাকে হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীরা ২টি এসএমজি, ৫টি চাইনিজ রাইফেল, ৪টি শর্টগান ও ৬৭০ রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে আনসার কমান্ডার আলী হোসেনকে। ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শী ও আনসার সদস্য আলমগীর হোসেন বাদি হয়ে ৩০/৩৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা দায়ের করেন। সুত্র: banglanews24, ১০ জানুয়ারি, ২০১৭.
মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA

Comments