বান্দরবানে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার চালানো অফিসের গাড়ির ধাক্কায় এক নারী গুরুতর আহ
বান্দরবান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার চালানো অফিসের গাড়ির ধাক্কাতে এক নারী গুরুতর আহত হয়েছে। এ দুর্ঘটনার পর গাড়ি না থামিয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গাড়ি চালানোর বিষয় অস্বীকার করেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের গণেশ পাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আহতের নাম মেসানু মারমা (২৩), পিতা মৃত চাই সা হ্লা মারমা। আহত নারী সুয়ালক হেডম্যান পাড়ায় বড় বোনের পরিবারের সাথে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মেসানু মারমা কৃষি কাজ শেষে বিকাল ৬টার দিকে হেডম্যান পাড়ায় বোনের বাড়িতে ফিরছিল। এসময় লামা উপজেলার দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা জেলা নির্বাচন অফিসের গাড়ির ধাক্কায় সে ছিটকে পড়ে যায়। সেসময় উপস্থিত লোকজন গাড়ি থামার ইঙ্গিত দিলেও গাড়ি না থামিয়ে দ্রুত গতিতে চালিয়ে চলে (স্থানীয়দের মতে, পালিয়ে যায়) যায়। তখন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলমকে গাড়ি চালাতে দেখেন বলে জানান প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা ।
স্থানীয়রা আহত নারীকে উদ্ধার করে প্রথমে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শারীরিক পরীক্ষার পরে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
চমেক থেকে আহতের সাথে থাকা পাড়াবাসী মং মং সিং মারমা জানায়, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে দশ মিনিটের মত জ্ঞান ফিরেছিল। কোন কথা বলতে পারে নাই। এরপর থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার (যোগাযোগের সময় পর্যন্ত) সময়ের মধ্যেও অজ্ঞান রয়েছে। এখন কোন স্যালাইন বা ইনজেকশন শরীরে যাচ্ছেনা। শুধু অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। ক্ষণে ক্ষণে শরীর কেঁপে উঠছে।
এদিকে স্থানীয় দুই শতাধিক মানুষ দুর্ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত গতিতে চলে আসা জেলা নির্বাচন অফিসের গাড়িটি মাঝের পাড়া রাস্তার মাথায় আটকে দেয়। সেসময় জাহাঙ্গীর আলম তড়িঘড়ি করে গাড়ি থেকে নেমে সটকে পড়েন। তখন স্থানীয়রা উত্তেজিত হলে সুয়ালক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উ ক্য নু মারমা, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কুদ্দুসসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি শান্ত করেন। এরপর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনায় বসেন।
দুর্ঘটনার ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মঙ্গলবার সকালে তিনি অফিসের গাড়িতে করে লামা ও আলীকদম উপজেলায় যান। ফেরার পথে হেডম্যান পাড়া এলাকায় একটি দুর্ঘটনা ঘটে। তখন চালক হতভম্ব হয়ে পড়লে তিনি নিজে গাড়ি চালিয়েছেন। সেসময় হয়ত স্থানীয়রা আমাকে গাড়ি চালাতে দেখেছে বলে জানান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক নেত্রী জানান, ঘটনার পর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আলোচনাকালে জাহাঙ্গীর আলম নেতৃবৃন্দের সামনে দুর্ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত ও অনিচ্ছাকৃত বলেছেন। ভুল হয়ে গেছে জানিয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আহতের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় বহনের দায়িত্ব নেন বলে জানান ওই নেত্রী।
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment