বান্দরবান হাসপাতালে সার্জনের দায়িত্বে পিওন!

ওমর ফারুক, বান্দরবান প্রতিনিধি: ১০০শয্যার বান্দরবান সদর হাসপাতালে সার্জনের দায়িত্ব পালন করছেন হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী অফিস-সহায়ক (পিওন) তোফাজ্জল।
সোমবার (৭আগষ্ট) বিকেলে সরজমিনে পরিদর্শনে গেলে বাস্তব চিত্র মিলে ইমারর্জেন্সিতে। ঢাকার মোবারক হোসেন নামে এক পর্যটক রামাজাদি যাওয়ার পথে কালাঘাটায় টমটম দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে মাথায় গুরুত্বর আঘাত পেলে তার মাথায় সেলাই করতে দেখা যায় এই অফিস সহায়কেই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৮জুলাই বাম হাতে আঘাত পেয়ে বান্দরবান সদরের নিউগুলশান এলাকার কৃষ্ণা চৌধুরী বান্দরবান সদর হাসপাতালের বহি:বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেলে ১০নং রুমে কর্মরত ডাক্তার তাকে ইমার্জেন্সিতে রেফার করেন। ইমার্জেন্সিতে থাকা হাসপাতালের পিওন তোফাজ্জল কৃষ্ণা চৌধিরীকে হাতে প্লাষ্টার করে দেন এবং ২৫দিন পর তা খোলার জন্য যোগাযোগ করতে বলেন।
গতকাল (৬আগষ্ট) সকাল ১০টায় প্লাষ্টার খোলার জন্য কৃষ্ণা হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত নার্স মৌসুমী তোফাজ্জলকে প্লাষ্টার খোলে দিতে বলেন।  কিন্তু
সে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং বাসায় দেখা করতে বলেন।
জেলার নিউগুলশান এলাকার ব্যবসায়ী রুপন চৌধুরীর স্ত্রী কৃষ্ণা চৌধুরী জানান, আমি তোফাজ্জলকে অনেক বার বলেছি প্লাষ্টার খুলে দিতে। প্রথমে মেশিন নষ্ট, পরে মেশিন বাসায় বলে সে প্লাষ্টার খুলে দেননি। কৃষ্ণা আরো জানান, সে প্লাষ্টার করার সময় বলেছিল ৩০০টাকা ছাড়া প্লাষ্টার খোলা হবে না। চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে আসি।
রুপন চৌধুরী বলেন, আমার স্ত্রী দোকানে এসে কান্না করলে আমি নিজে আঁড়ি ব্লেড (লোহা কাটার যন্ত্র) দিয়ে তার হাতের প্লাষ্টার কেঁটে খোলে দিয়েছি।
অফিস সহায়ক তোফাজ্জল জানান, প্লাষ্টার আমি করেছিলাম। মেশিন নষ্ট হওয়ায় তার হাতের প্লাষ্টার খুলতে পারি নাই। আমার বাসায় মেশিন আছে তাকে বাসায় কেঁটে দিব বলেছি। টাকা চাওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে সে দাবী করেন।
এ বিষয়ে বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: শাহানা রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি রবিবারে সিভিল সার্জনকে অবহিত করেছি, বক্তব্য তিনিই দিবেন।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডা: অংশৈ প্রু চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, তোফাজ্জল দেখতে দেখতে প্লাষ্টার করা শিখেছে। হাসপাতালের প্লাষ্টার খোলার মেশিন নষ্ট। অর্থোপেডিক না থাকায় সে কাজগুলো করে থাকে। সে এবিষয়ে অভিজ্ঞ কিনা জানতে চাইলে তিনি মিটিং এ আছেন বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
mongsai79@gmail.com

Comments