- Get link
- X
- Other Apps
কুতুপালং বৌদ্ধমন্দিরের উল্টো দিকে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। তাতে লেখা, অসহায় হিন্দু শরণার্থীদের আশ্রয়স্থল। এই শরণার্থী শিবিরে ১১২টি পরিবারের ৫২৩ জন আশ্রয় নিয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে এই শিবির চালাচ্ছেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁদের একজন সুজন শর্মা। গতকাল শনিবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই শরণার্থীদের জন্য যা কিছু ব্যয় হচ্ছে, তার কিছু অংশ কক্সবাজার পূজা উদ্যাপন পরিষদ বহন করছে। সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসে স্যানিটেশনের জন্য ৪১ হাজার টাকা দিয়ে গিয়েছিলেন। সরকারি ত্রাণের কার্ড তারা হাতে পেয়েছে, কিন্তু ত্রাণ পায়নি।
সুজন শর্মার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছে, তখন সারি বেঁধে নারী-শিশু-বৃদ্ধরা দুপুরের খাবার খেতে বসেছেন। এক মুঠো ভাত, পাশে এক চামচ আলু ভর্তা ও একটুখানি ডাল। শিশুদের বড় অংশের শরীরে কোনো কাপড় নেই। কেউ কেউ অনুপস্থিত। যে মুরগির খামার ফাঁকা করে তারা ঢালাও বিছানা করে থাকছে, সেখানে থেকে গেছে দুর্বলরা। ১২ জন নারী দূরের এক মন্দিরে গেছেন। মিয়ানমারে সন্ত্রাসীরা এসব নারীর স্বামীদের ‘কেটে’ ফেলেছে। মৃতদেহ মিয়ানমারের রাখাইনে ফেলে এক কাপড়ে পাহাড়-জঙ্গল ডিঙিয়ে তাঁরা বাংলাদেশে এসেছেন একেবারে খালি হাতে। এই শিবিরের কমপক্ষে ১০ জন নারী-পুরুষ বলেছেন, তাঁরা কৃপাপ্রার্থী। তাঁরা এখন ছোট ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে শুধু প্রাণে বাঁচতে চান।
কথা হচ্ছিল বকুল বালার সঙ্গে। স্বামী কানু রুদ্রর সঙ্গে তিনিও মাটির তৈজসপত্র বানাতেন। বাড়ি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর চিকনছড়ি গ্রামে। পূজার আগে স্বামী-স্ত্রীতে মিলে হাঁড়ি, পাতিল, ঘট, পূজার ব্যবহার্য নানান জিনিস বানিয়ে শেষ করেছিলেন। কেনাবেচাও চলছিল বেশ। শুধু নিজেদের প্রস্তুতিটাই বাকি ছিল। কথা ছিল বড় মেয়ে সন্ধ্যা বালা নাইয়র এলে মেয়ে, মেয়েজামাই আর একমাত্র নাতিকে নিয়ে কেনাকাটাটা সেরে ফেলবেন। কানু রুদ্র আগস্টের শেষ দিকে ছোট মেয়ে সীতা বালাকে নিয়ে মেয়ের বাড়ির উদ্দেশে দই, মিষ্টি আর আস্ত মুরগি রান্না করে রওনা দিয়েছিলেন। মেয়ের বাড়ি দু-চার দিন বেড়িয়ে ফেরার কথা। আর ফিরতে পারেননি। মেয়েকে নিয়ে বাড়ি আসার সময় খুন হয়েছেন। বকুল বালা স্বামী, দুই কন্যা আর একমাত্র নাতিকে হারিয়েছেন। স্বজনের মৃতদেহ দেখারও সুযোগ হয়নি। তিন ছেলেকে নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন।
ভালো নেই নিতাই শীলও। সারা শরীরে জখমের দাগ। চোখে রক্ত জমাট বাঁধা। চিকিৎসার দরকার। দেখার কেউ নেই।
ব্যক্তি উদ্যোগে চলা শরণার্থী শিবিরের এই মানুষেরাও রোহিঙ্গা মুসলিমদের মতোই অসহায়। মিয়ানমারে হিন্দু-মুসলিম এক পাড়ায় ছিলেন। প্রতিবেশীদের মধ্যে সদ্ভাব, সম্প্রীতি ছিল। মংডুর জন্য মন কাঁদে। বাংলাদেশে কী করবেন, ভবিষ্যৎ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, এই অবস্থায় মিয়ানমারে ফিরে গেলে নিশ্চিত মৃত্যু।
Source
মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ
https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment