রাঙ্গামাটি জেলাধীন নান্যচরের টিবিরাছড়িতে সেনাবাহিনীর শারিরিক নির্যাতনে গ্রামপ্রধান(কারবারী) অন চাকমা চাকমাসহ একই পাড়ার তিন নিরীহ গ্রামবাসী গুরুতর আহত হওয়া এবং ঘর-বাড়িতে ব্যপক তল্লাসি চালানোর খবর পাওয়া গেছে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন- ১) অন চাকমা(৬৫) গ্রামপ্রধান, পিতা- সুন্দর মোহন চাকমা গ্রাম-টিবিরাছড়ি, ২) কালো বিকাশ চাকমা(১৭) পিতা-অন চাকমা, গ্রাম-টিবিরাছড়ি, ৩) সাব্বে চাকমা(৩৫) পিতা-রেনুমোহন চাকমা, গ্রাম-টিবিরাছড়ি।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, গতকাল ৭ অক্টোবর সকাল ৯ টার দিকে খাগড়াছড়ি রিজিওন এবং গুইমারা রিজিওন থেকে ১০-১২টি জীপ নিয়ে এসে সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাঙ্গামাটি নান্যাচরের থানাধীন ফরেস্ট অফিস, আঠার মাইল, জরবো মাজন পাড়া ও টিবিরাছড়ি পাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ইউপিডিএফ কর্মীর খোঁজে নিরীহ জুম্মদের ঘরবাড়িতে ব্যপক তল্লাসি চালায় এবং টিবিরাছড়িতে গ্রামপ্রধানসহ তিনজনকে শারিরিকভাবে নির্যাতন করে গুরুতর আহত করে।
এলাকাবাসীরা তথ্যনুযায়ী, সেনাবাহিনীরা টিবিরাছড়িতে গিয়ে গ্রামপ্রধান(কারবারী) অন চাকমা’র কাছ থেকে ইউপিডিএফ কর্মীরা কোন কোন এলাকায় থাকে ? কখন আসে? কখন চলে যায়? এ ধরনের নানা জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন উপযুক্ত তথ্য দিতে না পারায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারবারী অন চাকমা’কে শারিরীরিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। সেনাদের নির্যাতনের এক পর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার ছেলে তাকে সেনাদের নির্যাতনের হাত থেকে তার পিতাকে বাচাতে আসলে সেনাসদস্যরা গ্রামপ্রধানের ছেলে কালোবিকাশ চাকমাকেও শারিরিক নির্যাতন করে গুরুতর আহত করে। তাদের বাপ-ছেলেকে গুরুতর আহত করার পর সেনাবাহিনীরা পার্শ্ববর্তী বাড়িতে গিয়ে একই কায়দায় জিঞ্জাসাবাদের পর বাড়ির মালিক সাব্বে চাকমাকেও মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে গুরুতর আহত করে মাটিতে রেখে সেখান থেকে বীরদর্পে চলে যায়। অতপর সেনাবাহিনীরা একই পাড়ার তপন চাকমার বাড়িতে যায়। সে সময় তপন চাকমা বাড়িতে না থাকায় তার স্ত্রী সুমিতা চাকমাকে সেনাসদস্যরা বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং পরে জোড়পূর্বকভাবে বাড়িতে ঢুকে বাড়ি তল্লাসি করতে থাকে। বাড়িতে ব্যাপক তল্লাসি চালানোর পর কোন কিছু না পেয়ে বাড়ির ভিতরে মাটি খুড়েও তল্লাসি চালায়। এতেও কোন কিছু না পেয়ে সেনাবাহিনীরা তপন চাকমার স্ত্রী সুমিতা চাকমা’কে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যভাবে গালিগালাজ করে।
অন্যদিকে আরেকদল সেনাসদস্য একই পাড়ার রীতায়ন চাকমা নামে এক কলেজ ছাত্রকে ইউপিডিএফ এর ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কলেজে পড়াশুনা করেন, বিধায় এ ব্যাপারে কিছুই তার জানা নেই বলেন এবং ছাত্রত্বের প্রমাণ স্বরূপ তিনি বইখাতা ও আইডিকার্ড সেনাদের দেখান। এরপরও সেনাসদস্যরা তাকে ইউপিডিএফের বিষয়ে বিভিন্ন জিঞ্জাসাবাদ করতে থাকেন। এতে তিনি কোন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে না পারায় ক্ষিপ্ত হয়ে সেনাসদস্যরা তার কলেজের বইপত্রসহ যাবতীয় পড়াশুনার সরঞ্জামাদি বাইরে ছুড়ে ফেলে দেয়।
পরবর্তীতে সেনাবাহিনীরা আসার পথে জরবো মাজন পাড়ার অনিল চাকমার বাড়িতে তল্লাসি চালায় এবং বাড়িতে অবৈধ কোন কিছু না পেয়ে বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে দেয়।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহত ব্যক্তিরা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা যায়।
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment