লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ফেসবুকে ‘বিকৃত’ ছবি ছড়িয়ে দেয়ায় জেমি আক্তার (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জেমি আক্তার উপজেলার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের জহুরুল ইসলামের মেয়ে এবং শাহ গরীবুল্যাহ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।
এ ঘটনায় রাতেই মরদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি আরাফাত হোসেন আরিফ (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। আটক আরাফাত একই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে জেমি আক্তারকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় আরিফ। কিন্তু মেয়েটি তার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। এনিয়ে আরিফ স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রায় সময় মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। বিষয়টি আরিফের বাবা-মাকে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
মেয়েটি মঙ্গলবার স্কুলে গিয়ে জানতে পারে যে, আরিফ নিজের ফেসবুক আইডিতে তার (জেমি আক্তার) ছবি ‘বিকৃত’ করে আপলোড করেছে। ফলে মেয়েটি বিষণ্ণ মনে স্কুল থেকে বাড়িতে ফিরে এসে কান্নাকাটি শুরু করে। এনিয়ে মেয়েটির বড় ভাই রনিও ফেসবুকে ওই ছবি দেখে তাকে বকাবকি করে। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে মেয়েটি।
জেমি আক্তারের মা নুরবানু বেগম (৩২) বলেন, দেড় বছর থেকে ওই ছেলে আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। এজন্য তার বাবা-মাকে বহুবার বলেছি। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ বলে তারা উল্টো আমাদেরকে গালিগালাজ করেছে। আজ তাদের জন্য আমি আমার সন্তান হারালাম।
মেয়েটির বাবা জহুরুল ইসলাম বলেন, কখনই ভাবিনি আমি আমার মেয়েকে এভাবে হারাবো। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাসান সরদার বলেন, মেয়েটির বাবা এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় আরাফাত হোসেন আরিফকে গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment