দুদিন পরই ২০১৭ সালে পা রাখবে বিশ্ব। সবার মনেই প্রশ্ন, কী ঘটতে যাচ্ছে নতুন বছরে? সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ইঙ্গিত দিচ্ছে, এই বছরটা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য কঠিনই হতে চলেছে।
২০১৫ সালের শেষ দিকে ধারণা করা হয়েছিল জাতীয়তাবাদী পপুলিজম (জনগণের আবেগ, অনুভূতি ও ভয়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকারের ধারণা) ২০১৬ সালে কূটনীতিকদের কাজ কঠিন করে তুলবে। আর এখন দেখা যাচ্ছে, বিশ্ব নিয়ন্ত্রণে পশ্চিমা ক্রীড়নকদের সক্ষমতা ব্যর্থ হতে শুরু করেছে।
যুক্তরাজ্যের ডিপ্লোমেটিক সার্ভিসের সাবেক প্রধান (২০১০-২০১৫) সিমন ফ্রেজারের মতে, ‘স্নায়ুযুদ্ধের পরবর্তী যুগের পশ্চিমা নেতৃত্বে বিশ্বায়নের ধারা, মার্কিন প্রাধান্য এবং উদার আন্তর্জাতিক মূল্যায়নের সমাপ্তি ঘটেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল স্ট্যানলি ম্যাকক্রিস্টাল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলায় বর্তমানে যে চাপের সৃষ্টি হয়েছে, তা বহুস্তরে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণেরই ইঙ্গিত দেয়।’ জেনারেল স্ট্যানলি আফগানিস্তানে ২০০৯-২০১০ সালে ন্যাটো বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন।
২০১৬ সালের শেষ দিকে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে তথ্য চুরির অভিযোগ, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও দেশটির সরকারের বিদেশি মিত্রদের বাহিনী আলেপ্পোয় বিদ্রোহীদের কোণঠাসা করার খবর, ফিলিপাইনের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসনে জাতিসংঘের উদ্যোগে সম্মেলন বর্জনের সিদ্ধান্ত চীন, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ কয়েকটি দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত, মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের বিজয়ী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বাণিজ্যচুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় এই চুক্তিসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চুক্তির অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হয়ে পড়া।
সিরিয়ার বাস্তবতা প্রমাণ করেছে, এই সংকট নিরসনে জাতিসংঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্য চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা সমাধানের পথ খুঁজে ক্রীড়নক রাশিয়া এবং চীন জাতিসংঘের দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বহুপক্ষীয় কূটনীতির চেয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে, যা আবারও ঊনবিংশ শতকের আবহ সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্যাট্রিক পোর্টারের মতে, ‘আমরা অস্বস্তিকরভাবে এবং অপ্রস্তুত অবস্থায় ঐতিহাসিকভাবে “স্বাভাবিক” এক কূটনীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, যেখানে আমরা একই সময় অন্য বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা এবং সহযোগিতা করব।’
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্পর্ক আদর্শিক রাজনীতি পরবর্তী কৌশলের এক অবাক করা উদাহরণ। তাঁরা দুজনই তুরস্কে রাশিয়ার জেট বিমান ভূপাতিত করার ঘটনা পর দ্রুতগতিতে দ্বন্দ্ব এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সম্পর্কোন্নয়ন করেছেন। প্রশ্নটা দাঁড়াচ্ছে, ইউরোপীয় দেশগুলো বা যুক্তরাষ্ট্র তাদের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য নিয়ে স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার চর্চা করা নেতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবেন কি না। যুক্তরাজ্যের সিমন ফ্রেজার বিশ্বাস করেন, আসছে সময়গুলোয় আইন, প্রতিষ্ঠান, চুক্তি এবং ‘চলার পথের অন্যান্য নিয়ম’ জরুরিই থেকে যাবে, তবে খুব সম্ভবত নতুন রূপ ধারণ করবে।’
বিশ্ব জানান দিচ্ছে, পশ্চিমা সমাজগুলো আন্তর্জাতিক নিয়মগুলোকে সম্মান করলেও রাশিয়া এবং চীন সেগুলো উপেক্ষা করতে জানে (উদাহরণ হিসেবে ক্রিমিয়া এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বাস্তবতাকে উল্লেখ করা যায়)।
এসব বিবেচনায় একটা প্রশ্ন দাঁড়িয়ে যায়, পশ্চিমা জোট, কিংবা ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কী তাদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ২০১৭ সালেও টিকে থাকতে পারবে? নতুন বছরে অনুষ্ঠেয় ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স ও জার্মানির নির্বাচনগুলো অবশ্যই ইইউয়ের পরীক্ষা নেবে। ন্যাটোর বিষয়ে বলতে গেলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণাকেই স্মরণ করতে হয়। তিনি বলেছেন, ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ন্যাটোর ব্যবহারে দেশগুলোকে আরও অর্থ খরচ করতে হবে।
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভবিষ্যতে তাঁর দেশের সম্পর্ক নির্ধারিত হবে ‘আইনের প্রতি এবং মানুষের মর্যাদার প্রতি ওয়াশিংটনের শ্রদ্ধার’ ওপর ভিত্তি করে।
২০১৫ সালের শেষ দিকে ধারণা করা হয়েছিল জাতীয়তাবাদী পপুলিজম (জনগণের আবেগ, অনুভূতি ও ভয়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকারের ধারণা) ২০১৬ সালে কূটনীতিকদের কাজ কঠিন করে তুলবে। আর এখন দেখা যাচ্ছে, বিশ্ব নিয়ন্ত্রণে পশ্চিমা ক্রীড়নকদের সক্ষমতা ব্যর্থ হতে শুরু করেছে।
যুক্তরাজ্যের ডিপ্লোমেটিক সার্ভিসের সাবেক প্রধান (২০১০-২০১৫) সিমন ফ্রেজারের মতে, ‘স্নায়ুযুদ্ধের পরবর্তী যুগের পশ্চিমা নেতৃত্বে বিশ্বায়নের ধারা, মার্কিন প্রাধান্য এবং উদার আন্তর্জাতিক মূল্যায়নের সমাপ্তি ঘটেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল স্ট্যানলি ম্যাকক্রিস্টাল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলায় বর্তমানে যে চাপের সৃষ্টি হয়েছে, তা বহুস্তরে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণেরই ইঙ্গিত দেয়।’ জেনারেল স্ট্যানলি আফগানিস্তানে ২০০৯-২০১০ সালে ন্যাটো বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন।
২০১৬ সালের শেষ দিকে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে তথ্য চুরির অভিযোগ, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও দেশটির সরকারের বিদেশি মিত্রদের বাহিনী আলেপ্পোয় বিদ্রোহীদের কোণঠাসা করার খবর, ফিলিপাইনের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসনে জাতিসংঘের উদ্যোগে সম্মেলন বর্জনের সিদ্ধান্ত চীন, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ কয়েকটি দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত, মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের বিজয়ী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বাণিজ্যচুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় এই চুক্তিসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চুক্তির অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হয়ে পড়া।
সিরিয়ার বাস্তবতা প্রমাণ করেছে, এই সংকট নিরসনে জাতিসংঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্য চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা সমাধানের পথ খুঁজে ক্রীড়নক রাশিয়া এবং চীন জাতিসংঘের দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বহুপক্ষীয় কূটনীতির চেয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে, যা আবারও ঊনবিংশ শতকের আবহ সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্যাট্রিক পোর্টারের মতে, ‘আমরা অস্বস্তিকরভাবে এবং অপ্রস্তুত অবস্থায় ঐতিহাসিকভাবে “স্বাভাবিক” এক কূটনীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, যেখানে আমরা একই সময় অন্য বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা এবং সহযোগিতা করব।’
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্পর্ক আদর্শিক রাজনীতি পরবর্তী কৌশলের এক অবাক করা উদাহরণ। তাঁরা দুজনই তুরস্কে রাশিয়ার জেট বিমান ভূপাতিত করার ঘটনা পর দ্রুতগতিতে দ্বন্দ্ব এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সম্পর্কোন্নয়ন করেছেন। প্রশ্নটা দাঁড়াচ্ছে, ইউরোপীয় দেশগুলো বা যুক্তরাষ্ট্র তাদের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য নিয়ে স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার চর্চা করা নেতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবেন কি না। যুক্তরাজ্যের সিমন ফ্রেজার বিশ্বাস করেন, আসছে সময়গুলোয় আইন, প্রতিষ্ঠান, চুক্তি এবং ‘চলার পথের অন্যান্য নিয়ম’ জরুরিই থেকে যাবে, তবে খুব সম্ভবত নতুন রূপ ধারণ করবে।’
বিশ্ব জানান দিচ্ছে, পশ্চিমা সমাজগুলো আন্তর্জাতিক নিয়মগুলোকে সম্মান করলেও রাশিয়া এবং চীন সেগুলো উপেক্ষা করতে জানে (উদাহরণ হিসেবে ক্রিমিয়া এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বাস্তবতাকে উল্লেখ করা যায়)।
এসব বিবেচনায় একটা প্রশ্ন দাঁড়িয়ে যায়, পশ্চিমা জোট, কিংবা ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কী তাদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ২০১৭ সালেও টিকে থাকতে পারবে? নতুন বছরে অনুষ্ঠেয় ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স ও জার্মানির নির্বাচনগুলো অবশ্যই ইইউয়ের পরীক্ষা নেবে। ন্যাটোর বিষয়ে বলতে গেলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণাকেই স্মরণ করতে হয়। তিনি বলেছেন, ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ন্যাটোর ব্যবহারে দেশগুলোকে আরও অর্থ খরচ করতে হবে।
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভবিষ্যতে তাঁর দেশের সম্পর্ক নির্ধারিত হবে ‘আইনের প্রতি এবং মানুষের মর্যাদার প্রতি ওয়াশিংটনের শ্রদ্ধার’ ওপর ভিত্তি করে।
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment