শুক্রবারের স্বাস্থ্য পরামর্শ:ভালো থাকুন ভ্রমণ খুলে দেবে শিশুর মনের জানালা

ভ্রমণ খুলে দেবে শিশুর মনের জানালাএই সময়ে শিশুদের পড়ালেখার চাপ কম। তাই অনেকেই বেড়াতে বের হচ্ছেন। বড় হতে হতে একটি শিশু আশপাশের নানা কিছু থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। ভ্রমণ শিশুদের মনে আগ্রহ জাগায়, নতুনকে জানতে, আবিষ্কার করতে। দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তনও আনে। এখন অনেক মা-বাবা দিনে কর্মস্থলে ব্যস্ত থাকেন, বাড়ি ফিরেও মোবাইল, কম্পিউটার কিংবা টিভি দেখে সময় কাটান। তাই বাচ্চাদের সত্যিকারভাবে সঙ্গ দেওয়ার আদর্শ উপায় হতে পারে ভ্রমণ। 
এই শীতে সন্তানকে নিয়ে যেতে পারেন গাছগাছালিতে ভরা কোনো গ্রামে। নিজের গ্রাম হলে তো আরও ভালো। এতে সে গ্রামের সঙ্গে পরিচিত হবে। প্রকৃতি ও গ্রামের মানুষের সংগ্রামী জীবন তার মনে দাগ কাটবে। সে যদি চোখে দেখে, শহরে আমরা যে সবজি বা ভাত খাই, তা উৎপাদন করতে বা চাষ করতে কৃষকেরা কী কষ্ট করে, তখন পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে তার স্বচ্ছ ধারণা জন্মে। এ ছাড়া খাবার প্রতিও আগ্রহ জন্মে, খাবার নিয়ে বায়না কমবে। দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসতে এবং ইতিবাচক ধারণা পেতেও সাহায্য করবে এই ভ্রমণ। বেড়াতে গেলে ভিন্ন মানুষ, ভিন্ন বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি দেখে অতিকেন্দ্রিকতা ও জড়তাও দূর হয়। 
অনেকে ভাবেন, শিশুদের নিয়ে বেড়ানো ঝামেলা। বেড়াতে গেলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়বে। রুটিন যাবে ভেঙে। কেউ ভয় পান খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম হবে। আসলে বেড়াতে গেলে মুক্ত হাওয়ায় তাদের শরীর আরও সুস্থ হয়ে ওঠে। ছোটাছুটি আর শারীরিক কসরতে তাদের হাড়ের গঠন শক্ত হয়। রোদের আলোতে পাবে ভিটামিন ডি। আর মনোজগতেও আসে পরিবর্তন। রুটিন ভাঙা কখনো কখনো জরুরি। 
বেড়াতে যাওয়ার সময় কিছু বিষয় লক্ষ রাখবেন। আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যথেষ্ট জামাকাপড় নেবেন। যেখানেই যান, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করবেন। রাস্তাঘাটে খোলা খাবার কখনোই শিশুকে দেবেন না, আবদার করলেও না। 
ভ্রমণে শিশু বমি করলে প্রয়োজনীয় ওষুধ খাইয়ে নিতে পারেন। সঙ্গে ওর স্যালাইন, প্যারাসিটামল ইত্যাদি জরুরি কিছু ওষুধপথ্য রাখুন। বেড়াতে গিয়েও এটা কোরো না, ওখানে যেয়ো না—এসব শৃঙ্খলে শিশুকে বেঁধে রাখবেন না। তাকে অবাধে খেলতে ও ছুটতে দিন। দেশের বা গ্রামের পথঘাট, অপরিচ্ছন্নতা বা নেতিবাচক বিষয় নিয়ে ওর সামনে বিরক্তি বা ক্রোধ প্রকাশ করবেন না। সব জায়গায় সব পরিবেশে মানিয়ে নিতে সাহায্য করুন। এই ভ্রমণ পথের শিক্ষা তাকে পরে সহনশীল ও উন্নত জীবন গড়তে সাহায্য করবে।

শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
mongsai79@gmail.com

Comments