যুবরাজ সিংকে দুটি লড়াই চালাতে হয়েছে এক সঙ্গে। প্রথমটি জীবনের সঙ্গে, দ্বিতীয়টি ২২ গজে। ক্যানসারকে হারিয়ে স্বাভাবিক জীবনে এলও যুবককে লড়াইটা চালাতে হয়েছে মাঠেও। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের পর ভারতীয় দলে সুযোগই পাচ্ছিলেন না। চার বছরের বিরতিতে কদিন আগে ইংল্যান্ড সিরিজ দিয়ে ফিরেছেন দলে। আজ কটকে ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ রান করে প্রত্যাবর্তনের সিরিজটা স্মরণীয় করে রাখলেন যুবরাজ, ১২৭ বলে করেছেন ১৫০ রান। ইংলিশদের বিপক্ষে যেটি ভারতীয় ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।
২০ মার্চ ২০১১ থেকে ১৯ জানুয়ারি ২০১৭—প্রায় অর্ধযুগ পর ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন যুবরাজ। যুবরাজের মতো অত লম্বা সময় না হলেও মহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাটে সেঞ্চুরি এল ৪ বছর, আরও স্পষ্ট করে বলছে সাড়ে তিন বছর পর। আর এই দুই বুড়ো সৈনিকের ২৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা ভারত ছুটছে বড় সংগ্রহের দিকে। ৪৬ ওভারে ভারতের স্কোর ৫ উইকেটে ৩২৩।
ধোনি এখনো উইকেটে আছেন। যুবরাজ অবশ্য ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে ফিরেছেন। চেন্নাইয়ে ২০১১ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১১৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস, সেটাই ছিল তাঁর সর্বশেষ সেঞ্চুরি। এর পর লম্বা বিরতি। এই সময়ে ২০ ইনিংসে ফিফটি মাত্র দুটি, সর্বোচ্চ ৬১। সময়টা তাঁর এতটাই বাজে গেছে, ২০১১ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট-সেরা দলে সুযোগ পাননি পরের বিশ্বকাপে। এক সময় তো মনে হলো, জাতীয় দলে ফেরার আর আশা নেই। ‘প্লে বয়’ যুবরাজ বিয়ে থা করে সংসারীও হলেন বুঝি!
কিন্তু বিয়েটাই ভাগ্য বদলে দিল। ঘরোয়া ক্রিকেটের দুর্দান্ত ফর্ম ফিরিয়ে আনল জাতীয় দলেও। ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে আলো ছড়িয়ে যুবি বুঝিয়ে দিলেন, ফুরিয়ে যাননি। যুবরাজের ব্যাটিং এতটাই ছন্দময়, বুঝতেই দেননি মাঝের বিরতিটা ছিল অনেক লম্বা। ৯৮ বলে সেঞ্চুরি করেছেন। পরের ২৯ বলে আরও ৫০। যখন আউট হয়েছেন, আরও ৭ ওভার বাকি। যেভাবে খেলছিলেন। ডাবল সেঞ্চুরি পেতে পারেন বলেও মনে হচ্ছিল। ২১ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংসটি শেষে থেমেছে ক্রিস ওকসের বলে।
যুবরাজের দিনে জ্বলে উঠেছেন ধোনিও। চতুর্থ উইকেটে দুজন গড়েছেন ২৫৬ রানের জুটি। একেবারে বিপদের মুখে দলের হাল ধরেছেন দুজন। একজন ছয় বছর, আরেকজন প্রায় চার বছর পর সেঞ্চুরি পেলেন। ওয়ানডেতে দুই সেঞ্চুরির মাঝের বিরতি হিসাব করলে এটি অবশ্য রেকর্ডের তালিকায় নিচেই থাকবে। এই তালিকায় সবার ওপরে আছেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। সাবেক জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যানের দুই ওয়ানডে সেঞ্চুরির মাঝে ছিল ৮ বছরের বিরতি। ভারতের সাবেক অধিনায়ক আজহারউদ্দিনকে তিন অঙ্কের দেখা পেতে একবার অপেক্ষা করতে হয়েছিল ৭ বছর।
mongsai79@gmail.com
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment