- Get link
- X
- Other Apps
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ফ্যাশন দুনিয়া থেকে আসা প্রথম ফার্স্ট লেডি হবেন মেলানিয়া ট্রাম্প। রূপ-সৌন্দর্যে কম নন তিনি। দীর্ঘাঙ্গী, একহারা, আর আছে ফ্যাশন দুনিয়ার মডেল হওয়ার অভিজ্ঞতা।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের হবু ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া অদ্ভুত এক সংকটে পড়েছেন স্বামী নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে। সেই সংকট হলো, ফ্যাশন নকশাকারেরা তাঁর পোশাকের নকশা করতে চাইছেন না। কাল শুক্রবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা নিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। জাঁকাল ওই অনুষ্ঠানে মেলানিয়া কোন পোশাকে হাজির হবেন, এ নিয়ে চলছে গুঞ্জন। বলা হচ্ছে যে এ পোশাক বাছাই করার বিষয়টি মেলানিয়ার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি হবে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, মেলানিয়া জিকিউয়ের জন্য অনাবৃত হয়ে ছবি তুলেছেন, ফ্যাশন সাময়িকী ‘ভোগ’ তাঁকে প্রচ্ছদকন্যাও করেছে। সমস্যা হলো কাল শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) নতুন প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি কী পরবেন, তা এখনো ঠিক করা হয়নি। এটা সম্ভবত তাঁর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ সংকট নিয়ে ট্রাম্পও যে চিন্তিত, তা তাঁর বক্তব্যেই বোঝা যায়। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে ট্রাম্প বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে মেলানিয়া কোন পোশাক পরবেন, তা খুঁজে পাওয়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ এর সত্যতা কতটুকু, তা সময়ই বলে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডিদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পরা গাউন স্মিথসোনিয়ানস ন্যাশনাল মিউজিয়ামে রাখা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক রাখা হয় এই জাদুঘরে। সেখানে প্রেসিডেন্ট আইজেন হাওয়ার থেকে শুরু করে মিশেল ওবামার ২০০৯ সালে পরা গাউনও রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন ইতিহাসে ফ্যাশন দুনিয়া থেকে আসা প্রথম ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প অনেকের পছন্দনীয় ও স্টাইলিশ ফার্স্ট লেডি হবেন।
এখন বলা মুশকিল যে মেলানিয়া ঠিক কোন পথে হাঁটবেন। আগে বলেছিলেন, তিনি জ্যাকি কেনেডির মতো ‘ঐতিহ্যধারী’ ফার্স্ট লেডি হতে চান। ফরাসি ও মার্কিন ফ্যাশনের অনুরাগী ছিলেন জ্যাকি কেনেডি। তাঁর সাজসজ্জাকে কালোত্তীর্ণ বলেও অভিহিত করেন অনেকে।
তবে মেলানিয়া ট্রাম্প এমন একসময় ফার্স্ট লেডির ভূমিকায় আসছেন, যখন অনেক নকশাকার তাঁর পোশাকের নকশা করতে চাইছেন না। কারণ হিসেবে অস্বীকৃতি জানানো নকশাবিদেরা বলছেন, মেলানিয়া ঠিক তাঁদের (নকশা) স্টাইলের নন। ওই নকশাকারেরা পরস্পরকে মেলানিয়ার পোশাকের নকশা না করতে নিজেদের অনুরোধ করছেন। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, মেলানিয়ার স্বামী ট্রাম্প অপমানসূচক এবং বিভক্তি সৃষ্টিকারী প্রচার চালিয়েছেন।
এ ক্ষেত্রে সবার আগে যে নামটি সামনে আসে, তিনি সোফি থেলেটের। গত বছরের নভেম্বরে তিনি বলেছিলেন, ‘তাঁর (মেলানিয়ার) স্বামী বর্ণবাদী, যৌনতা এবং বিদেশিদের সম্পর্কে আতঙ্ক ছড়ানো যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ।’ এ আবেগ কাঁচা মনে হতে পারে। এটা মূলত ডেমোক্রেটিক পার্টি-সমর্থিত অধিকাংশ নকশাবিদদের মধ্যে দেখা যায়। এঁরা মূলত ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন করে তাঁর তহবিলে চাঁদাও দিয়েছেন।
উইমেন্স ওয়্যার ডেইলির মার্ক জ্যাকব বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি আমার কাজে ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকদের জন্য কাজ করতে চাই।’
তবে মেলানিয়ার পোশাক তৈরি করতে চাওয়া নকশাবিদের সংখ্যাও কম নয়। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নকশাবিদ ক্যারোলিনা হেরারা, ডিয়ানে ভন ফার্স্টটেনবার্গ এবং টমি হিলফিগাররা বলেছেন, মেলানিয়ার পোশাকের নকশা করতে পারলে তাঁরা সম্মানিতবোধ করবেন।
হিলফিগার, যাঁর একটি অফিস আছে ট্রাম্প টাওয়ারে। তিনি বলেন, নতুন ফার্স্ট লেডি এবং ট্রাম্প-কন্যা ইভানকা ট্রাম্পের পোশাকের নকশা করতে পারলে যে কেউ ‘গর্বিত’ হতে পারেন।
কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এ নিয়ে বিতর্ক অপ্রাসঙ্গিক। কারণ মেলানিয়া অনলাইনে কেনাকাটা করতে অভ্যস্ত। অনলাইনে কারও অনুমতি ছাড়াই তিনি পছন্দের যেকোনো কিছু কিনতে পারেন।
নববর্ষের প্রাক্কালে তিনি ডলসে অ্যান্ড গ্যাবানার একটি কালো পোশাক পরেছিলেন। ওই ছবি ছাপা হওয়ার পর পোশাকের নকশাকারী স্তেফানো গাবানা ইনস্টাগ্রামে গর্বভরে বিষয়টি তুলে ধরেন। ছবিতে দেওয়া পোস্টে পাঁচটি হৃদয় চিহ্ন এঁকে তিনি লেখেন ‘ধন্যবাদ’।
নববর্ষের প্রাক্কালে তিনি ডলসে অ্যান্ড গ্যাবানার একটি কালো পোশাক পরেছিলেন। ওই ছবি ছাপা হওয়ার পর পোশাকের নকশাকারী স্তেফানো গাবানা ইনস্টাগ্রামে গর্বভরে বিষয়টি তুলে ধরেন। ছবিতে দেওয়া পোস্টে পাঁচটি হৃদয় চিহ্ন এঁকে তিনি লেখেন ‘ধন্যবাদ’।
ভন ফার্স্টটেনবার্গ বলেছেন, ‘ফ্যাশনশিল্পের অংশ হিসেবে আমাদের ভূমিকা হলো সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য তুলে ধরা।’
mongsai79@gmail.com
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment