- Get link
- X
- Other Apps
নিন্দুকেরা বলছেন, তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি বিকৃত করা হয়েছে। আসলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) লেখকেরা কবিতাটি বিকৃত করেননি, বরং কবিতাটি যেমন হওয়া উচিত ছিল সেটাই করেছেন। তাঁদের হয়ে ব্যাখ্যা দাঁড় করাল রস+আলো।
l কবিতাটির চতুর্থ লাইনে ‘মানুষ হইতে হবে’ কথাটাকে লেখা হয়েছে ‘মানুষ হতেই হবে’। এখানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) মূলত একই কবিতায় সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ দেখিয়েছে। এই গুরুচণ্ডালীর মধ্য দিয়ে ‘কোনটি সাধু ভাষার শব্দ এবং কোনটি চলিত ভাষার শব্দ’ বাছাই করার দক্ষতা যাচাই করাই এর মূল উদ্দেশ্য। সবচেয়ে বড় কথা হলো, ‘মানুষ হইতে হবে’ কথাটি ভবিষ্যতের সংকল্প। কিন্তু এসব সংকল্প করলে আজকাল কিছু হয় নাকি? ধর তক্তা মার পেরেকের যুগ এটা। পরীক্ষা দিলেই এ প্লাস। অতএব মানুষ হতেই হবে। বাই হুক অর বাই টেক্সট বুক!
l কবিতার নবম লাইনে ‘সে ছেলে কে চায়’-এর বদলে ছাপা হয়েছে ‘সে ছেলে কে চাই’। এখানে মূলত বর্তমান কালকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কারণ ভবিষ্যৎ নয়, বর্তমানই হলো আসল কথা। ভবিষ্যতে কে কী চায়, কেন চায়—সেসব না ভেবে বর্তমান নিয়ে ভাবাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাই তাঁরা বলেছেন, ‘চাই’। মানে এখনই কার দরকার? যেমন আমরা বলি, ‘এই কলমটা কার চাই?’
l কবিতার একাদশ লাইনে ‘মনে প্রাণে খাট সবে’-এর বদলে ‘মনে প্রাণে খাটো সবে’ লেখা হয়েছে। এখানে লেখকেরা হয়তো অনেক গবেষণা করে পেয়েছেন যে ‘পরিশ্রম’ করার চেয়ে ‘বেঁটে’ হলেই সহজে মানুষ হওয়া যায়। আর বেঁটে তো কেবল উচ্চতায় নয়, মেধায়ও বেঁটে হওয়া যায়। তাই এখানে মনে এবং প্রাণে খাটো হতে বলা হয়েছে।
l মূল কবিতাটি ছিল ১৬ লাইনের। কিন্তু পাঠ্যপুস্তকে সেটি ১২ লাইনে ছাপা হয়েছে। এর মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিশাল অবদান রেখেছে এনসিটিবি। কারণ, আরও চার লাইন ছাপতে গেলে আরেকটি পৃষ্ঠা দরকার হতো। তার ফলে কাগজ লাগত বেশি। আর কাগজ একটু কম লাগা মানে বৃক্ষনিধন একটু কম হওয়া। আর বৃক্ষনিধন কম হওয়া মানেই পরিবেশ একটু বেশিই ভালো থাকা।
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment