পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ কর্তৃক চাঁদাবাজি


খাগড়াছড়ি জেলায় চাঁদাবাজি নিয়ে দেশের প্রথম সারির দৈনিক “প্রথম আলো” পত্রিকার রিপোর্টটি বের হয়েছে। চমৎকার তথ্যহুল রিপোর্ট করা হয়েছে। অরুণ কর্মকার এবং জয়ন্তী দেওয়ান নামক দুজন ব্যক্তি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অন্যতম পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে । এতদিন শুনে আসছিলাম শুধু পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের কর্মীরা তাদের দল পরিচালনা এবং জনগণের স্বার্থে চাঁদা তুলে রাজনৈতিক দল পরিচালনা করে । প্রায় সময় পত্রিকায় দেখা যায় আঞ্চলিক নেতাবৃন্দরা চাঁদা তুলে ।

যেখানে শিরোনাম জুড়ে ব্যবহার করা হয়েছে বড় পরিসরে আঞ্চলিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা জনগণ থেকে চাঁদা আদায় করে এতে জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। সেগুলোর রিপোর্ট আসে অধিকাংশ খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে । যা সেখানকার স্থানীয় সেতেলার এবং বিভিন্ন ভাড়াতে সাংবাদিক কর্তৃক এগুলো রুচিসম্মত ভূঁইফোড় স্থানীয় প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকা চালুকরণ, সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে ভিত্তিহীন ইতিহাস অবতারনা করে, সাম্প্রদায়িক উস্কানী দিয়ে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ধোঁয়া তুলে ঘৃণ্য তথ্য সন্ত্রাসে এসব গোষ্ঠী মরিয়া হয়ে উঠেছে ।   

প্রথম আলো রিপোর্ট এ এক পর্যায়ে দেখা যায় ,এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে ইউপিডিএফের দুজন নেতা প্রথম আলোর সঙ্গে মুখোমুখি বসে কথা বলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নেতারা বলেন, দেশের সব রাজনৈতিক দল চাঁদা তুলে দল পরিচালনা করে। তাঁরাও দল পরিচালনার জন্য জনগণের কাছ থেকে চাঁদা নেন। তবে এ জন্য তাঁরা কোনো জোর-জুলুম করেন না। বরং জনগণের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করেন। চাঁদার একটি পয়সাও দলের কোনো নেতা-কর্মীর ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যয় করা হয় না। এমন কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারলে তাঁরা প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন।

এই নেতারা বলেন, ব্যবসায়ীদেরও তাঁরা সহায়তা করেন, নিরাপত্তা দেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন ব্যবসায়ী এক লাখ টাকা মুনাফা করলে হয়তো পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দেন। কিন্তু ইউপিডিএফ নিরাপত্তা না দিলে হয়তো দেখা যাবে, তিনি ওই ব্যবসাটাই করতে পারবেন না। তাই ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছায় তাঁদের চাঁদা দেন। 

এছাড়া বাঙালি ছাত্র পরিষদের চাঁদা তুলে কিনা জানতে চাইলে , প্রথম আলোকে দেওয়া তথ্যমতে পানছড়ি শহরতলীর সেটেলার বাসিন্দা ইকরাম (ছদ্মনাম) বছরখানেক আগেও দিনমজুরি করতেন। এখন বাঙালি ছাত্র পরিষদের চাঁদা তুলে দেওয়ার কাজ নিয়েছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, এই কাজে পরিশ্রম কম, আয় বেশি। চাঁদা কাদের কাছে চাওয়া হয়েছে, কে কত দেবেন, তা তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তিনি নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে সেটা তুলে নেতাদের কাছে পৌঁছে দেন। এই তাঁর কাজ।

বাঙালি ছাত্র পরিষদের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের দুটি গ্রুপেরই স্থায়ী উপদেষ্টা একজন। এ ছাড়া আরও চারজন বিভিন্ন সময় তাঁদের উপদেশ-পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নাম প্রকাশ না করে তাঁরা বলেন, এই চারজনই খাগড়াছড়ির সবার পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। চাঁদাবাজি বন্ধ করতে প্রশাসনের ভূমিকা জানার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে জানা গেছে, এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো কার্যক্রম নেই। তবে তাঁরা গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে চাঁদাবাজির ব্যাপকতা সম্পর্কে জানাশোনা অনেক কথা বলে থাকেন।

তাই আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে মনে করি দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল চাঁদা তুলে দল পরিচালনা করে। এটা সবার জানা আছে । তিন পার্বত্য জেলার আঞ্চলিক সংগঠনগুলো যেহেতু গণতান্ত্রিকভাবে জনগণের পৃষ্টপোষকতা জনগণ এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থে দীর্ঘকাল ধরে রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছে সেহেতু এটা রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাহতি হবার কথা না । পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘসময়ের পর আজ পার্বত্য বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদ নেতাকর্মীদের কর্তৃক চাঁদাবাজি অভিযোগ সামাজিকভাবে জনসম্মুখে উন্মোচিত হয়েছে ।যা এতদিন ধরে বিভিন্নভাবে তারা ধামাচাপা দিয়ে আসছিল । মুখোশ যখন উন্মোচন হয়েছে আগামীতে ও হবে ইনশাল্লাহ । তার জন্য আমি প্রথম আলোর রিপোর্টার অরুণ কর্মকার এবং জয়ন্তী দেওয়ানকে সাহসের সাথে প্রতিবেদন দেওয়ায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।  
mongsai79@gmail.com

Comments