খাগড়াছড়িতে ফাঁসকরা প্রশ্নপত্রে চাকুরী পাচ্ছেন দলীয় ও পরিষদের স্বজনরা; ২৫ কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

শরিফুল হাসান: পার্বত্য জেলা পরিষদ খাগড়াছড়ির নিকট হস্তান্তরিত প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে সহকারি শিক্ষককের লিখিত পরিক্ষার ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রে সম্পন্ন হয়েছে লিখিত পরিক্ষা। পরিক্ষার আগের দিন রাত ২টার দিকে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের এক কর্মচারীর যোগ সাজসে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে পরিক্ষার্থী সূত্রে জানাযায়। এছাড়াও পরিক্ষার্থী সংখ্যা নিয়ে রয়েছে বিভ্রান্তি। এক পরিক্ষার্থী জানান জেলা পরিষদ এর নাজির সাইফুল এবং জেলা শিক্ষা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর মো. জাহাঙ্গীর ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাস করে দেয়।
জেলা সদরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নতুনকুড়ি হাই স্কুল ও খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ কেন্দ্রে অংশ্গ্রহণকারী (বহিস্কৃত) জানান, পরীক্ষা শুরুর আগের দিন রাত ২টার দিকে দলীয় নেতা-কর্মী, পরিষদ সদস্যদের পরিষদ কর্মচারী সাইফুল এবং জেলা শিক্ষা অফিসের জাহাঙ্গীর ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও খাগড়াছড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ফটোকপি করা উত্তদরপত্র দেখে অনেকে উত্তর লিখেছে।আমি জানতে চাইলে তারা বলে পরিষদ বলে কথা এখানে অসম্ভব বলে কিছু নেই। টাকা দিলে বাঘের চোখও মিলে।
তারা বলেন, বিষয়টি পরিষদ চেয়ারম্যানও জানেন। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে খাগড়াছড়ি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হলের এক ছাত্র ওই হলের একটি কক্ষ নম্বর দিয়ে অভিযোগ করেন, পরীক্ষা শুরুর আগে কয়েকজনের হাতে অঙ্কের উত্তর দেখেছেন। পরে জানতে পারেন সেগুলোই পরীক্ষায় এসেছে।
মনিময় ত্রিপুরা নামের এক পরীক্ষার্থী একটি সুনির্দিষ্ট রোল নম্বর দিয়ে বলেন, এই পরীক্ষার্থী একটি অঙ্ক করে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষককে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওই শিক্ষক কোনো ব্যবস্থা নেননি। প্রশ্নপত্র ফাঁস না হলে ওই ছেলে জানলেন কী করে এই অঙ্ক পরীক্ষায় আসবে?
এক পৌর কাউন্সিলর বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। দুইটা অঙ্ক সবার মুখে মুখে পরিক্ষা শুরুর আগেই শুনেছি। মাহমুদুল হাসান নামের এক পরীক্ষার্থী জানান, তিনি খাগড়াছড়ি কলেজে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সেখানে দুজনকে দেখেছেন যাঁরা কার্বন এর লেখা কাগজে উত্তর লিখে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তিনি মামলার ভয়ে সেটা ডিলিট করে দিয়েছেন। যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন এই প্রশ্নগুলোই এসেছে।
এদিকে ফাসকৃত প্রশ্নপত্রে নেয়া লিখিত পরিক্ষা বাতিল না করে জেলা পরিষদ তড়িঘড়ি করে খাতা কেটে আজ সোমবার লিখিত পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। পরিক্ষায় পাশকরা অধিকাংশই জেলা পরিষদ সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী এবং প্রশ্ন ফাস করা ব্যাক্তিদের কন্ট্রাককৃতদের ।
পরিক্ষার্থীর সংখ্যা হঠাৎ করে বৃদ্ধি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিগত ৬ আগষ্ট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত কেন্দ্র ভিত্তিক পরিক্ষার্থীর সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৩২৮৩। অপরদিকে গত ২৫ আগষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত কেন্দ্র ভিত্তিক মোট পরিক্ষার্থী দেখানো হয়েছে ৩২৯৩ জন। ১০ জন পরিক্ষার্থী কিভাবে বাড়ল এনিয়ে জেলা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অংশ গ্রহনকারীরা বলছেন ঐ ১০ জন পরিষদ সদস্য, পরিষদের সাইফুল এবং জেলা শিক্ষা অফিসের জাহাঙ্গীরের কন্ট্রাক করা লোকজন।
১জন পরিক্ষার্থীর অনুকুলে ৩ জনকে ভাইভাতে ডাকার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ করছেন পরিক্ষার্থী ও তাদের স্বজনরা।
নিয়োগ নিয়ে তিন জেলার মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদে দূর্ণীতির অভিযোগ বরাবরই উঠে থাকে।
২০১৩ সালে ৩৫৮টি পদের বিপরীতে সহকারি শিক্ষক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় জেলা পরিষদ।
পরিক্ষার্থীরা বলেন সঠিক তদন্ত হলে অভিযোগটি প্রমাণ করা যাবে।
মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA

Comments