প্রতিক্রিয়া এটা অশনিসংকেত

রাশেদা কে চৌধূরীধর্ষণ ও খুনের যে ঘটনাগুলো ঘটছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজে মূল্যবোধ এমন পর্যায়ে গেছে, মনে হচ্ছে, আমরা সবকিছু সয়ে নিতে শুরু করেছি। আমরা সবকিছুকে মেনে নিতে শুরু করেছি। এটা অশনিসংকেত।
সবচেয়ে আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি। অর্থবিত্ত, রাজনৈতিক প্রতিপত্তি—সবকিছুকে খাটিয়ে, ব্যবহার করে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এর দায় আমাদের সবার ওপর বর্তাবে, শুধু সরকারের ওপর নয়। আমরা কতটুকু করতে পেরেছি। একটা, দুটো কিংবা চারটি ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে হয়তোবা আমরা কিছুটা নিরসন দেখতে পেতাম। যেমন­ অ্যাসিড-সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি।
আমার মনে হয়, এই ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের ঘটনায় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। দ্রুত বিচার করা সম্ভব হলে হয়তো এমন অপরাধ কমে আসবে। আর সমাজে কতগুলো ব্যাধি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। যেমন মাদক। এই ধরনের বেশির ভাগ অপরাধীই মাদকাসক্ত থাকে। এই যে মাদকের ব্যবহার, এটা রোধ করার দায়িত্ব কার? রাষ্ট্র এর দায় এড়াতে পারে না।
আমাদের সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরি হয়েছে। একশ্রেণির মানুষের কাছে এত অর্থ এবং তাঁদের সন্তানেরা কী করছে, সেটা হয়তো অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকেরাও খোঁজ নেন না। তারপরও আমি আশাবাদী। কারণ, এ দেশের কিছু মানুষ অন্যায়কে সহ্য করতে করতে একটা সময় উঠে দাঁড়ায়, রুখে দাঁড়ায়। আমরা দেখেছি, মানুষ নিজেই দুষ্কৃতকারীদের ধরিয়ে দিয়েছে। এত কিছুর পরও মানুষ প্রতিরোধ করতে বা রুখে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্রকে আগে সহায়ক হতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া এসব অপরাধের নিরসন হবে না। আমরা দেখেছি, মামলার বা তদন্তের দুর্বলতার কারণে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়, ছাড় পেয়ে যায়, জামিন পেয়ে যায়। এটা ঠিক করতে রাষ্ট্রের ভূমিকা সবচেয়ে বড়।
স্থানীয় প্রশাসন যদি চায় তো বাল্যবিবাহের মতো শিশু ধর্ষণও ঠেকানো সম্ভব। কারণ, অনেক জায়গায় আমরা স্থানীয় প্রশাসনকেই বাল্যবিবাহ রোধ করতে দেখেছি। প্রশাসন তৎপর হলে ধর্ষণের মতো অপরাধও বন্ধ করা সম্ভব। একই সঙ্গে সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরাও নিজ নিজ এলাকায় ভূমিকা রাখতে পারেন।
এ ছাড়া দেশের তরুণদের মধ্যে সুস্থ বিনোদনের, সুস্থ সংস্কৃতির চর্চাটা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, যে পরিবারে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা হয়, সেই পরিবারের শিশুরা জঙ্গিবাদ, ধর্ষণ ও খুনের মতো অপরাধের দিকে ঝুঁকবে না।
মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA

Comments