আমরা নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের পোড়াই আর রোহিঙ্গাদের জন্য কাঁদি…

আমরা নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের পোড়াই আর রোহিঙ্গাদের জন্য কাঁদি...
বাংলাদেশের সীমান্তরেখায় হাজার হাজার নারী রোহিঙ্গা। পুরুষদের অধিকাংশই পুনারায় ফিরে যাচ্ছে পাল্টা আক্রমণে..! এবার উভয় পক্ষ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত মনে হচ্ছে...

রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ইস্যুতে ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত

Dr. Imran H Sarker:

১.
শিশুটার চোখের দিকে তাকাতে পারছি না! কি অপরাধ এই অবুঝ শিশুর? ও তো জানেই না ওর পরিচয় ঠিক করা আছে রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা; মুসলিম।
অথচ ও শুধুই একজন মানব শিশু।
আমরা নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের পোড়াই আর রোহিঙ্গাদের জন্য কাঁদি...
২.
রোহিঙ্গারা মানুষ। তাদের অন্য সব পরিচয় বাদ দিলেও মানুষ হিসেবে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ করুন। এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে ঠুনকো অযুহাতে চুপ থাকবেন না প্লিজ।
৩.
রোহিঙ্গাদের উপর কি ভয়াবহ অত্যাচার চলছে! সারা দুনিয়া এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলো দেখেও না দেখার ভান করে আছে। ভয়ংকর একটা সত্য কথা হলো, এই নিরবতার প্রধান কারন ওরা মুসলিম।
আহা, মুসলিম বাদে ওরা অন্য ধর্মের মানুষ হলে মানবতার চোটে দুনিয়ায় থাকা মুশকিল হয়ে যেতো!!
ছি! একচক্ষু মানবতা ছি!!

H.M. Nazrul

১.
রোহিঙ্গাদের জন্য বেশি মানবতা দেখালে সোজা কথা, বাংলাদেশের নাগরিকদের মাইনক্কার চিপায় পড়তে হবে..
এমনিতে চট্টগ্রাম বিভাগকে ভোটার তালিকায় ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করছে নির্বাচন কমিশন।
এরা বাংলাদেশে আশ্রয় পাচ্ছে বলেই এই দেশে ফিরে আসছে। বিশ্বের কোন দেশে ভিন্ন কোন রাষ্ট্রের জনগণ অবাধে চলাফেরা করতে পারে না একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া?? কক্সবাজারের শ্রম বাজার রোহিঙ্গাদের দখলে, বন, পাহাড়, ঝাউবন সৈকতের বালুচর, সৈকতের রেণু পুনা নিধন, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাকাণ্ড, টেকনাফে আনসার ক্যাম্পে হামলা করে অস্ত্র লুট, আনসার সদস্যকে হত্যাসহ সবকটি অপরাধমূলক কাজ আজ তাদের নিয়ন্ত্রণে।
এই দেশে বসে যারা এখনো তাদের জন্য মায়াকান্না করছেন, দয়া করে ফেসবুকে মায়াকান্না না করে সীমান্তে আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের মুখে খাবার তুলে দিন এবং তাদের দেশে চলে যেতে উৎসাহ দিন।
নোট: রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দেয়া সমাধান নয়। বরং দেশকে বিপদের মুখে ফেলা। সমাধান হলো, মিয়ানমারকে সামরিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ করা।
২.
মায়ানমার দেশটি সাতটি রাজ্য নিয়ে গঠিত। চিন, কাচিন, কারেন, মন, রাখাইন, এবং শান। প্রতি রাজ্যে মুসলমানরা আছে শান্তির সাথে, ভেজাল সব মন্ডু আরাকান রাজ্য! কারণ এরা জঙ্গিদের অর্থায়নে চলে..! রোহিঙ্গা জঙ্গীদের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো দেখলে বোঝা যায় এদের মিশন কত বড়।
নিজ দেশের বন্যাকবলিত মানুষের কথা চিন্তা করুন, এরা অনাহানে পানিবন্দি হয়ে আছে।

Nirjhar Mazumder

২০১৫ সাল। সিরিয়াতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরেই সুইডেন ঘোষনা দিয়েছিলো সেদেশের সকল রিফিউজিকে তারা নিঃশর্ত আশ্রয় দেবে।
তিন মাসের মধ্যে সংখ্যাটা ১,৬০,০০০ ক্রস করার পর পরই সুইডেনের মাইগ্রেশন ঘোষণা দিয়ে দেয় যে, আর কাউকে আশ্রয় দেয়ার মতো ক্ষমতা তাদের নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রথমবারের মতো রিফিউজিরা তীব্র শীতে খোলা ময়দানে, বাসে, স্টেশনে রাত কাটাতে বাধ্য হয়।
এর পরেই মূলত সেদেশে রাজনৈতিক সংকট শুরু হয় যায়। তখন আমি সুইডেনে ছিলাম। সুইডেনে একজন প্রখ্যাত শিল্পী (ক্যারোলা) রিফিজিদের আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে বেশ সরব থাকার কারণে তাকে ফার-রাইটদের নানান বিদ্রুপের সম্মুখীন হতে হচ্ছিলো। এই ভদ্রমহিলা জবাবস্বরূপ একটা রিফিউজি ফ্যামিলিকে নিজের ভিলাতে আশ্রয় দেন।
যাই হোক। এরপরেই বিগত ষাট বছরে প্রথমবারের মতো তারা তাদের মাইগ্রেশন রুল চেঞ্জ করে ফেলে। এবং পুরো ইউরোপে একমাত্র ডানপন্থী অস্ট্রিয়ার পাশাপাশি তারাও সর্বনিম্ন সময়ের জন্য রিফিউজিদের থাকার পারমিশন দেয়া শুরু করে, যেটা প্রচন্ড রকমের বিশাল একটা চেঞ্জ ছিলো তাদের জাতীয় নীতিতে।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া উচিত কি উচিত না, সে বিতর্কে যাওয়ার আগে আমাদের মনে রাখা উচিত যে, চ্যারিটি বিগিনস এট হোম। আপনি নিজে সামর্থ্যবান থাকলে আপনার বাসায় অন্তত একজন প্রাণভয়ে ভীত লোককে আশ্রয় দিন। তার জীবন বাঁচাতে সহায়তা করুন। তাকে আর্থিক এবং অন্যান্য সহায়তা করুন।
সেটা যদি পারেন, তাহলে আপনার অধিকার আছে, এ ব্যাপারে সরকারের কাছে দাবী জানানোর। আর না হলে আপনার-আপনাদের মুখে মানবতার কথা একটা হিপোক্রেসির মতো শোনায়।
(সুইডেনে রিফিউজি ক্রাইসিস শুরু হওয়ার পরে কিছু শহরের অবস্থা সোমালিয়ার রাজধানীর মতো হয়ে গিয়েছিলো। ফলাফল স্বরূপ সেখানে ডানপন্থীদের উথ্থান দেখতে হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছিলো পুরো মাইগ্রেন্ট জনগোষ্ঠীর উপরে- যাদের অধিকাংশই খেটে খাওয়া সাধারণ মুসলিম।
চ্যারিটি মাঝে মধ্যে ব্যাক ফায়ারও করে, সেটার উদাহরণ দেয়ার জন্য বললাম। এবং এটাও মনে রাখতে হবে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ বা চাওয়া একটাগুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার, যেটা মানতে বাংলাদেশ বাধ্য।

আনিস রায়হান

দেখা যাচ্ছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার দাবী এক রকম নয়। কেউ কেউ মনে করছেন তারা ‘রোহিঙ্গা বাঙালি’, তাই তাদের আশ্রয় দিতে হবে।
কারো কারো মতে বৈধ পথে আশ্রয় না দিলে তারা অবৈধ পথে ঢুকবে আর দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে, এজন্যই তাদের শিবিরের মধ্যে তালিকা করে আশ্রয় দেয়া দরকার।
কেউ কেউ মনে করছেন তারা মুসলিম, তাই তাদের আশ্রয় দেয়া দরকার। এই মতও দেখলাম যে, একাত্তরে উদ্বাস্তু হওয়ার পর বাঙালিদের তারা ও অন্যরা আশ্রয় দিয়েছিল, তাই আমাদেরও আজ উচিত সীমান্তে জড়ো হওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ক্যাম্প স্থাপন করা।
এগুলো সবই নিপীড়ক স্বার্থান্ধদের দৃষ্টিভঙ্গি। এরা নিজেদের নানান ধরনের স্বার্থ দ্বারা চালিত হয়েই রোহিঙ্গাদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে।
রোহিঙ্গারা যে মিয়ানমার ‘রাষ্ট্রের দ্বারা নিপীড়িত’, এটা তাদের কাছে কোনো ব্যাপার নয়। অথচ এটাই একমাত্র সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি যে, তারা রোহিঙ্গা তথা একটি জাতিসত্ত্বা, আর তারা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার- এজন্যই তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
আমরা নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের পোড়াই আর রোহিঙ্গাদের জন্য কাঁদি...
বাংলাদেশের সীমান্তরেখায় হাজার হাজার নারী রোহিঙ্গা। পুরুষদের অধিকাংশই পুনারায় ফিরে যাচ্ছে পাল্টা আক্রমণে..!
এবার উভয় পক্ষ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত মনে হচ্ছে…
Shishir Azam
আমরা নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের পোড়াই আর রোহিঙ্গাদের জন্য কাঁদি…
মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA

Comments