‘যুদ্ধ চাইছেন’ কিম উন: যুক্তরাষ্ট্র


উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন দেশটির সবশেষ ও সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমার পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ‘যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাইছেন’ বলে মত দিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত নিকি হেলি। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠকে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ চাইছে না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের ধৈর্য সীমাহীন।
উত্তর কোরিয়ার ওপর বাড়তি নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মরিয়া ভাবের কথা নিকি হেলির কথায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তিনি বলেছেন, বাড়তি নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কূটনৈতিক পথে উত্তর কোরিয়াকে ফেরানো সম্ভব।
তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন খোলাখুলি এ ক্ষেত্রে তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। রাশিয়ার মতো চীনও দিয়েছে আলোচনার প্রস্তাব।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন গতকাল মঙ্গলবার বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কঠোর অবরোধ আরোপে হিতে বিপরীত হতে পারে এবং সামরিক পদক্ষেপ নিলে তা ‘বৈশ্বিক বিপর্যয়’ ডেকে আনতে পারে। চীনে অনুষ্ঠিত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন শেষে ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে নতুন সংকটে মার্কিন কূটনীতির সমালোচনা করেন। এ সময় আলোচনার প্রস্তাব দেন তিনি। পুতিন এ-ও বলেন, পিয়ংইয়ং তার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো ততক্ষণ বন্ধ করবে না, যতক্ষণ তারা নিরাপদ অনুভব করে।
পুতিন বলেন, জাতিসংঘের নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে তা হবে অকার্যকর এবং অদক্ষতার পরিচয়। রুশ নেতা সংকট সমাধানে সংলাপের জন্য উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তা না হলে পরিস্থিতি খারাপ হবে, আর তাতে করে বিশ্ব বিপর্যয় নেমে আসবে এবং বহু লোক বিপদগ্রস্ত হবে।’
উত্তর কোরিয়ার প্রধান মিত্র চীন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে এবং সুইজারল্যান্ড দিয়েছে মধ্যস্থতার প্রস্তাব।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নহাপ নিউজ এজেন্সির খবরে গতকাল বলা হয়, তাদের নৌবাহিনী গতকাল লাইভ নৌ মহড়া চালিয়েছে। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, যদি উত্তর কোরিয়া প্ররোচিত করে তাহলে ‘আমরা তাৎক্ষণিক পাল্টা আক্রমণ করব’।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তর কোরিয়া। এর আগে গত রোববার উত্তর কোরিয়া সফলভাবে হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে বলে দাবি করে। এই বোমা পরমাণু বোমার চেয়ে অনেক গুণ শক্তিশালী, যা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহার করা সম্ভব। বিশ্লেষকেরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার এ দাবি সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, তিনি পিয়ংইয়ংয়ের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কঠোর অবরোধ আরোপে চাপ দেবেন।
জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের দূত লো জেই আলোচনায় ফেরার জন্য সব পক্ষের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, এই উপদ্বীপে বিশৃঙ্খলা ও যুদ্ধ হতে দেবে না চীন। প্রসঙ্গত, উত্তর কোরিয়ার কাছের মিত্র ও বাণিজ্য সহযোগী বলে পরিচিত চীনের পক্ষে অনেক কিছুই করা সম্ভব বলে মনে করা হয়। পিয়ংইয়ংয়ের সবশেষ পরীক্ষা চালানোর পরপরই চীন বলেছে, উত্তর কোরিয়া আবারও পরমাণু পরীক্ষা চালিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক আপত্তিকে উপেক্ষা করেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট দরিস লইতহার্দ বলেন, ‘আমি মনে করি, এখনই সঠিক আলোচনার সময়। মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনের প্রস্তাব দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।’
মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA

Comments