চেমী ডলু পাড়া প্রাঃ বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ !

চেমী ডলু পাড়া প্রাঃ বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ !
বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নে চেমী ডলু পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনার কমিটি( এসএমসি) সভাপতি’র বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়াও সরকারি দল আ.লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে ক্ষমতা প্রভাব দেখিয়ে সাধারণ গ্রাম বাসীদের অত্যাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলছেন, গত অর্থ বছরে উপজেলা প্রশাসন থেকে বিদ্যালয় মাঠ সংস্কারের বাবত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় চার লাখ টাকা। মাঠ সংস্কারের পর অবশিষ্ট আটাশ হাজার টাকায় বিদ্যালয়ের পাশে মাটি ভাঙ্গন রোধে কাজ  করতে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি(এসএমসি)’র সভাপতি ক্যচিংঅং মারমা অবশিষ্ট আটাশ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনার কমিটি(এসএমসি) সদস্য ও কুহালং ইউপির সাবেক সদস্য প্রুমেচিং মারমা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য মন্ত্রীর নির্দেশনা মানছেন না এসএমসি সভাপতি। মাঠ সংস্কারের পর বরাদ্দের অবশিষ্ট আটাশ হাজার টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের পাশে মাটি ভাঙ্গন রোধে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। এসএমসি সভাপতি  টাকাগুলো বিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্টে জমা না দিয়ে আত্মসাত করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয় মাঠে দু’টি গভীর নলকুপ রয়েছে। একটি নলকূপ বেআইনী ভাবে বিদ্যালয় পাশে নির্মিত গোয়াল ঘরের মালিক মংক্যহ্লা মারমাকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ দিয়ে স্বজনপ্রীতি দেখাচ্ছেন। এতে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুসহ সাধারণ গ্রামবাসী এই পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এসএমসি’র সহ সভাপতি পুশৈথোয়াই মারমা জানান, মাঠ সংস্কারের পর অবশিষ্ট আটাশ হাজার টাকা থেকে বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় খরচ করে বাকি পঞ্চিশ হাজার পাঁচশ’ টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে সভাপতির হাতে রেখেছে। যেটি সম্পূর্ণ অনিয়ম।
স্থানীয় গ্রামবাসী ক্যহ্লাঅং মারমা বলেন, বিদ্যালয় এসএমসি’র সভাপতি ক্যচিংঅং মারমা আমার জামাতা মংক্যচিং মারমা থেকে গত বছরে ১৫হাজার টাকার বিভিন্ন আইটেমে সার বাকি নেয়ার পর পাওয়ানা টাকা চাইলে আমার জামাতার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। আমার জামাতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তার  নাতি অংথোয়াইচিং মারমাকে দিয়ে গভীর রাতে দোকানের দরজা ভেঙ্গে নগদ ৪০হাজার টাকাসহ বিপুল পরিমাণে সারসহ বিভিন্ন মূল্যবান দ্রব্য চুরি করাচ্ছেন ক্যচিংঅং মারমা। চুরি হওয়া মালামাল ধরা পড়ার পর গ্রাম প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। কিন্তু প্রভাবশালীর কারনে শুনানীর একাধিক ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। গ্রাম প্রধান অসহায় অবস্থায় এই চুরি ঘটনার বিচার করতে পারেনি।
স্থানীয় সচেতন ব্যক্তি অংশিং মারমা জানান, গত বেশ  কয়েক বছর আগে স্থানীয় সহজ-সরল দরিদ্র কৃষকদের সহজ শর্তে  ঋণ নিয়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার করেছে কৃষকদের সাথে। কয়েক শ’ কৃষকের নামে বেনামে অগ্রণী ব্যাংক,বান্দরবান শাখা থেকে কয়েক কোটি গরীবের ঋণের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন । ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাংক থেকে নোটিশ পাবার পর প্রতারিত কৃষকরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। কয়েক শ’ অসহায় কৃষক ভূয়া ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে অনিশ্চয়তার জীবন যাপন করছেন। এ ঘটনার পর প্রশাসনের চাপের মুখে ঋণের কিছু টাকা পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপর গ্রামবাসী মেসাংপ্রু মারমা জানান, ক্যচিংঅং মারমা’র নির্যাতনে অতিষ্ঠ সাধারণ গ্রামবাসী। তিনি (ক্যচিংঅং মারমা)  গ্রামের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে চলেছেন। অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
বান্দরবান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিক উল্লাহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
নির্যাতিত গ্রামবাসী মংক্যচিং মারমা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয় এসএমসি সভাপতি ক্যচিংঅং মারমা নানা ভাবে আমাকে হয়রানী করছেন। ষড়যন্ত্র করে আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ক্ষতি করেছেনে। গত বছরে আমার দোকান থেকে পনের হাজার টাকার সার বাকি নিয়েছে। পাওয়ানা টাকা চাইতে গেলে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে দেখে নেয়ার কথা বলে।তার নাতিকে দিয়ে রাতের অন্ধকারে আমার দোকানের দরজা ভেঙ্গে চল্লিশ হাজার টাকাসহ মালামাল চুরি করিয়েছেন। প্রভাবশালী হওয়াতে ন্যায় বিচারও পাইনি।
এদিকে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও এসএমসি’র সদস্য সচিব মনোরঞ্জন বড়–য়া বলেন,  প্রাপ্ত বরাদ্দ দিয়ে মাঠ সংস্কারের পর আর কোন অবশিষ্ট টাকা নেই দাবি করলেও  পরে আবার বিশ-পঞ্চিশ হাজার টাকা এসএমসি সভাপতি ক্যচিংঅং মারমা হাতে আছে বলে স্বীকার করেছেন।
অভিযুক্ত বিদ্যালয় এসএমসি সভাপতি ক্যচিংঅং মারমা অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয় সংস্কারের পর অবশিষ্ট আটাশ হাজার টাকা থেকে বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় খরচ করা হয়েছে আড়াই হাজার টাকার মত। বাকি পঞ্চিশ হাজার পাঁচশ’ টাকা দিয়ে সংস্কার করা বিদ্যালয় মাঠ মন্ত্রীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খরচ করতে জমা রাখা হয়েছে।
মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA

Comments

Post a Comment

Thanks for you comment