একটি গাভি থেকেই বছরে ২০-২৫ বাছুর, তাও আবার বাংলাদেশেই

একটি গাভি থেকেই বছরে ২০-২৫ বাছুর, তাও আবার বাংলাদেশেই [দেখুন ভিডিও]
বছরে একটি নয় দুটি বাছুর দেবে গাভীব্যতিক্রম ছাড়া গাভী সাধারণত বছরে একটি বাছুর জন্ম দেয়। কিন্তু এখন থেকে বছরে নিশ্চিত দুটি করে বাছুর জন্ম দেবে। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের বায়োটেকনোলজি বিভাগের গবেষকরা এ সাফল্য দেখিয়েছেন।
সম্প্রতি দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন এ গবেষকরা। যার মাধ্যমে একটি গাভীর পেট থেকে প্রতি বছর দুটি বাছুর জন্মানো সম্ভব হবে। ইনভারট্রো অ্যামব্রায়ো প্রডাকশন বা আইভিপি প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের বায়োটেকনোলজি বিভাগের গবেষকরা এ সাফল্য দেখিয়েছেন। ২০১৭ সালের প্রথমার্ধে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে এ প্রযুক্তি নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
গাভীর পেটে ভ্রূণ স্থাপন প্রযুক্তির মাধ্যমে দুটি বাছুর জন্ম দেয়া প্রতিনিধি দলের প্রধান ড. গৌতম কুমার জানান, চার বছরের টানা গবেষণার ফলে তারা এ সাফল্য অর্জন করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে টেস্টটিউব বেবির আদলে বছরে একটি গাভী থেকেই পাওয়া যাবে ন্যূনতম ২০-২৫টি বাছুর, যা দেশের মাংস আর দুধের ঘাটতি পূরণে সক্ষম হবে। দেশের জনসংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। 
একই সঙ্গে বাড়ছে মাংস ও দুধের চাহিদা। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সরকারি সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) নতুন নতুন গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বিএলআরআই’র গবেষকরা প্রাণিসম্পদের উৎপাদন সমস্যা চিহ্নিতকরণ, জাত উদ্ভাবন, খাদ্য ও পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে। পাশাপাশি খাদ্যনিরাপত্তা, প্রাণিজ উপকরণ ও পণ্যের মূল্যসংযোজন, খামারি ও উদ্যোক্তাদের পরামর্শ, সেবা ও শিল্পায়নে সহায়তার মাধ্যমে প্রাণিজ পুষ্টি সরবরাহ এবং মেধাসম্পন্ন জাতি গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
বিএলআরআই’র মহাপরিচালক ড. তালুকদার নুরুন্নাহার এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের লক্ষ্য লাগসই এ জীবপ্রযুক্তির উদ্ভাবন প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া, যা দেশের ক্রমবর্ধমান মাংস ও দুধের ঘাটতি মিটিয়ে প্রাণিসম্পদ খাতকে সমৃদ্ধ করবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এজন্য প্রয়োজন হবে কোনো দুধেল গাই বা উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের গাভী। আমরা প্রথমে ওই গাভী থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করব। সেই ডিম্বাণু ল্যাবে পরিপক্ব, নিষিক্তকরণ এবং কালচার শেষে তা ভ্রূণে পরিণত করা হয়।
সাতদিন ল্যাবে থাকার পর অপেক্ষাকৃত দুর্বল বা দুধ কম দেয় এমন গাভীর জরায়ুতে তা স্থাপন করা হয়। এভাবে নির্ধারিত সময়ে ভ্রূণ বেড়ে ওঠে। ১০ মাসের কম-বেশি সময়ের মধ্যে সেই গরু থেকে বাছুর পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, এভাবে আমরা একটি সুস্থ সবল ও উচ্চ উৎপাদনশীল গাভী থেকে বছরে ন্যূনতম ২০-২৫টি সুস্থ ডিম্বাণু দিয়ে তা সমসংখ্যক গাভীর গর্ভে স্থাপনের মাধ্যমে উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের গবাদিপশুর সংখ্যা বাড়াতে পারি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ পদ্ধতিতে বাছুর উৎপাদনের মাধ্যমে সফলতা পেয়েছে। 
এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও বহু আগে থেকে এ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেদের প্রাণিসম্পদের বিস্তার ঘটিয়েছে। সরকার তো কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমেও প্রাণিসম্পদের সম্প্রসারণ করছে। উচ্চ উৎপাদনশীল ষাঁড় থেকে ‘বীজ’ সংগ্রহ করে তা থেকেও কৃত্রিম প্রজনন করা হচ্ছে।
Source মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA

Comments