- Get link
- X
- Other Apps
পাহাড়ি অঞ্চলে বাস, নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। এমন পরিবারে গর্ভবতী স্ত্রীর জন্য থাকে না বিশেষ কোনো ব্যবস্থা। গর্ভাবস্থায় আপ্রুমা মগিনি বুঝতে পারলেন, তাঁর বাচ্চা নড়াচড়া করছে না। পরিবারটির উৎকণ্ঠা গেল বেড়ে। সুস্থ-সবল বাচ্চার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছুই তো করার নেই তাদের। অবশেষে এক রোববার সকালে ঘর আলো করে এল ফুটফুটে এক শিশু। তাকে নিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে ওঠার আগেই বিস্ময়করভাবে দুই মিনিটের ব্যবধানে আরেক শিশুর আগমন। দুজনই কন্যাশিশু, অর্থাৎ যমজ বোন। মারমা পরিবারটিতে উৎসবের বদলে বাজল বেদনার সুর।
সেই দুই বোন আজ নারী জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় আনুচিং মগিনি ও আনাই মগিনি (বড়)। জন্মের পর একসঙ্গে যে দুই মুখে খাবার তুলে দেওয়ার ভয় পেয়েছিলেন বাবা রিপ্রু মগিনি, আজ তারাই তাদের বাবার মুখে তুলে দেয় আহার। জীবনের কী অদ্ভুত পালাবদল! সে গল্পটা একটু সংক্ষেপে শুনে নিই গর্বিত বাবার মুখ থেকে, ‘পরিবারের কেউ জানতাম না আমার স্ত্রীর গর্ভে দুটি বাচ্চা। প্রথম বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর ভালোই লাগল। কিন্তু যমজ বাচ্চা দেখে অবাক হলাম, খারাপও লাগল। অভাবের পরিবার। কী দিয়ে কী করি? এখন ওদের জন্যই অনেক সুখে আছি।’
আনুচিং ও আনাই কয়েক বছর ধরেই খেলছে জাতীয় দলে। একই সঙ্গে বয়সভিত্তিক দলেরও নিয়মিত মুখ। গত বছর ঢাকায় এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাইপর্বে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে বেশ উপার্জনও হয়েছিল তাদের; যা অসচ্ছল পরিবারের মুখে ফুটিয়েছে হাসি। তাদের উপার্জন দিয়ে বাড়িতে দেওয়া হয়েছে ঘর, কেনা হয়েছে জমি।
খাগড়াছড়ির সাতভাইয়া পাড়ায় তাদের বসবাস। মা-বাবা এবং চার বোন ও তিন ভাই মিলে বড় পরিবার। বাবা-মা দুজনই কৃষক। আর ভাইয়েরা মিস্ত্রি। এমন পরিবারে দুই ফুটবলার যমজ বোনই এখন আশার প্রদীপ। যাদের জন্য পরিবারটিকে এলাকায় এখন সবাই চেনে।
এক গর্ভে একই সঙ্গে জড়াজড়ি করে তারা থেকেছে নয় মাস। পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখেছে দুই মিনিট আগে ও পরে। কিন্তু তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো পুরোপুরিই ভিন্ন।
আনুচিং সব সময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। মুখে সব সময় হাসি লেগেই থাকে। আর আনাই বড্ড লাজুক। গা ঢাকা দিয়ে রাখতে পারলেই যেন বাঁচে। বড় বোনকে পাশে রেখে ছোট আনুচিং নিজেই বলে, ‘ওর সঙ্গে আমার তো কোনো মিলই নেই। এমনকি ও যে খাবার পছন্দ করে, তা আমার বেশি পছন্দ নয়।’
আনুচিং সব সময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। মুখে সব সময় হাসি লেগেই থাকে। আর আনাই বড্ড লাজুক। গা ঢাকা দিয়ে রাখতে পারলেই যেন বাঁচে। বড় বোনকে পাশে রেখে ছোট আনুচিং নিজেই বলে, ‘ওর সঙ্গে আমার তো কোনো মিলই নেই। এমনকি ও যে খাবার পছন্দ করে, তা আমার বেশি পছন্দ নয়।’
খেলার মাঠেও তাদের চরিত্রটা পুরোপুরি ভিন্ন। ছোট আনুচিংয়ের কাজ গোল করা অর্থাৎ স্ট্রাইকার। বড় আনাইয়ের কাজ গোল ঠেকানো অর্থাৎ ডিফেন্ডার। চলতি অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে আনুচিং প্রথম ম্যাচেই নেপালের বিপক্ষে করেছে জোড়া গোল। আর আনাই ডিফেন্ডার হিসেবে অতন্দ্রপ্রহরী।
তবে দুজনের ফুটবলার হওয়ার গল্পের শুরুটা একসঙ্গেই। তা হলো ২০১১ সালের বঙ্গমাতা ফুটবল। এরপর খাগড়াছড়ি জেলা দলের হয়ে খেলে ২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া। তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে পাঁচটি গোলও আছে ছোট আনুচিংয়ের। এরপর থেকেই জাতীয় ও বয়সভিত্তিক দলের নিয়মিত মুখ দুজন।
তবে দুজনের ফুটবলার হওয়ার গল্পের শুরুটা একসঙ্গেই। তা হলো ২০১১ সালের বঙ্গমাতা ফুটবল। এরপর খাগড়াছড়ি জেলা দলের হয়ে খেলে ২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া। তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে পাঁচটি গোলও আছে ছোট আনুচিংয়ের। এরপর থেকেই জাতীয় ও বয়সভিত্তিক দলের নিয়মিত মুখ দুজন।
খেলা হলেই দুই বোনের ছবি ভেসে ওঠে টিভির পর্দায়, বড় বড় ছবি যায় পত্রিকার পাতায়। রিপ্রু ও আপ্রুমা মগিনি গর্ব নিয়ে দেখেন, প্রচলিত সমাজকে দেখান। আর আনমনে বলে ওঠেন, যাদের জন্ম দেখে ভয় পেয়েছিলাম, আজ তারাই আমাদের আশার আলোর প্রদীপ।
Source
মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণhttps://www.youtube.com/dashboard?o=U https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment