নাম আটলান্টিক কিলফিশ। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের মোহনায় বিষাক্ত পানিতেও এই মাছ দিব্যি বেঁচে-বর্তে আছে। কিন্তু কীভাবে? ডাভিসে অবস্থিত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলছেন, প্রাণিটির দ্রুত ক্রমবিকাশ ঘটেছে। সে কারণেই এটি ওই পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। নইলে ওই দূষিত জায়গায় যেকোনো জলচর প্রাণীর বেঁচে থাকা কঠিন।
এ বিষয়ে সায়েন্স সাময়িকী একটি প্রতিবেদন ছেপেছে। এতে গবেষকেরা লিখেছেন, ম্যাসাচুসেটস, কানেটিকাট, নিউজার্সি ও ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের কাছাকাছি এলাকার পানি শিল্পকারখানার রাসায়নিক বর্জ্যে সাংঘাতিক দূষিত। কিন্তু সেখানে কিলফিশের বেঁচে থাকার সামর্থ্য অন্যান্য মাছের চেয়ে আট হাজার গুণ বেশি। এর রহস্য প্রাণীটির জিনেই লুকানো রয়েছে।
ওই গবেষকেরা প্রায় ৪০০ কিলফিশের সম্পূর্ণ জিন নকশা উদ্ধার করে দেখতে পান, দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনে প্রাণীটির উচ্চমাত্রায় ক্রমবিকাশ ঘটেছে। কারণ, এটির জিনগত বৈচিত্র্য অন্য যেকোনো জলচর প্রাণীর তুলনায় অনেক বেশি। কিলফিশ যেসব জলাশয়ে থাকে, সেখানকার পানি পাঁচ দশকেরও বেশি আগে থেকে ভারী রাসায়নিক উপাদান নির্গমনে দূষিত।
জেলেদের কাছে অবশ্য এই কিলফিশের কোনো বাণিজ্যিক মূল্য নেই। গবেষক দলটির প্রধান অ্যান্ড্রু হোয়াইটহেড বলেন, প্রতিকূল পরিবেশে মাছটির টিকে থাকার এ রকম সামর্থ্যকে কেউ কেউ ইতিবাচক ভাবতে পারেন। হয়তো দূষিত পরিবেশে মানুষেরও এ রকম বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও কেউ আশাবাদী হতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অধিকাংশ প্রজাতিই পরিবেশের দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। কারণ, তাদের উচ্চমাত্রায় জিনগত বৈচিত্র্য থাকে না। আর সেটা ছাড়া দ্রুত ক্রমবিকাশের সুযোগ নেই।
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment