বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ জয়ের এক যুগ পূর্তি হচ্ছে আজ।
২০০৫ সালের ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ২২৬ রানে জিম্বাবুয়েকে পরাজিত করে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিল।
"এটা আমাদের জন্য ছিল খুব স্পেশাল একটা দিন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যও এটি ছিল খুবই স্মরণীয় দিন। এর আগে মুলতানে আমরা একবার জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলাম, কিন্তু শেষপর্যন্ত জয় আসেনি। কিন্তু এই ম্যাচের আগেই আমরা ভাবছিলাম যে এটাই হয়তো হতে পারে আমাদের প্রথম টেস্ট জয়" বলেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্টজয়ী দলের অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন।
ওই ম্যাচের দুই ইনিংসেই বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন সুমন। প্রথম ইনিংসে ৯৪ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৫ রান।
তবে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে ধস নামিয়ে নিজের ডেব্যু ম্যাচেই ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন এনামুল হক জুনিয়র।
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ২০০০ সালের নভেম্বরে ভারতের সাথে প্রথম টেস্ট ম্যাচের প্রায় চার বছর পর জয় ধরা দেয় বাংলাদেশের হাতে।
প্রথম টেস্টে দুই ইনিংসে ৫ উইকেট নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা
ওই টেস্ট দলে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে একমাত্র মাশরাফি বিন মুর্তজাই এখনো নিয়মিত জাতীয় দলে খেলছেন। যদিও টেস্ট ক্রিকেট থেকে এরই মধ্যে অবসরে গেছেন মাশরাফি।
দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৪৮৮ রানের বড় সংগ্রহের ৪৮টি রানও এসেছিল এই তরুণ পেসারের ব্যাট থেকে।
জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে ধস নামিয়েছিলেন স্পিনার মোহাম্মদ রফিক। আর ম্যাচে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৯ রান এসেছিল রাজিন সালেহ-র ব্যাট থেকে।
"দেশে বা দেশের বাইরে যখনি কোন টেস্ট সিরিজ খেলতে যেতাম তখনি প্রথম কথাই হতো যে বাংলাদেশ এখনে কোন টেস্ট ম্যাচ জেতেনি। এটাও আমরা পাল্টাতে চাচ্ছিলাম যে মানুষ অন্তত বলুক যে বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচ জিতেছে" বলেন হাবিবুল বাশার সুমন।
প্রথম টেস্ট জয়ের পর অবশ্য গত ১২ বছরে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে যতটা এগিয়েছে টেস্টে তার চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে আছে।
এখনো পর্যন্ত ৮০ টা টেস্ট ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় মাত্র ৮টিতে। ড্র রয়েছে ১৫টি।
বাংলাদেশের প্রথম টেস্টজয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন
"আমরা যখন টেস্ট ম্যাচ খেলা শুরু করি তখন বিষয়টা অনেকটা শিশুর হামাগুড়ি দেয়ার মত ছিল। বাংলাদেশ যখন টেস্ট ম্যাচ জিতেছে ততদিনে কিন্তু অনেক দেশ টেস্ট ক্রিকেটে প্রায় ১০০ বছর পার করে ফেলেছে। অন্যান্য অনেক দেশ জিততে যতটা সময় নিয়েছে বাংলাদেশ কিন্তু ততটা সময় নেয়নি"
"আমি মনে করি বাংলাদেশ এখন টেস্ট ম্যাচে হাটা শুরু করেছে। ২-৩ বছরে দৌড়ানোও শুরু করবে। হয়তো আমাদের টেস্ট ম্যাচ জয়ের সংখ্যা এতদিনে খুব বেশি নয়, কিন্তু এই চিত্র খুব শিগগিরই পাল্টে যাবে এটুকু বলতে পারি" বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়েই বলেন হাবিবুল বাশার।
২০১৭ সালে বাংলাদেশ বিদেশের মাটিতে বেশ কিছু টেস্ট ম্যাচ খেলবে।
১২ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের সাথে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। ফেব্রুয়ারিতে ভারতের সাথে একটি টেস্ট খেলার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে রয়েছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।
mongsai79@gmail.com
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment