২..
সেদিন ছিলো ০৮ ই মার্চ ২০১৭ খ্রীঃ, বিশ্ব নারী দিবস। সেদিন অনলাইনের মাধ্যমে জানা যায় রাজস্থলী হতে নিপা তঞ্চঙ্গ্যা নামে এক কলেজ ছাত্রী হারিয়ে যায়, আমি তার তথ্য খুঁজতে গিয়ে পায় তার কোন এক বাঙালি ছেলের সাথে প্রেম আছে, তার আগেও নাকি বান্দরবান মেঘলায় ধরা পড়ে নিপাকে বাঙালি ছেলের সাথে অশালিনভাবে ঘুরতে। তাই স্থানীয় কিছু ভাই তাকে কিছু কথা বলে সাবধান করে দেয়। আর প্রসঙ্গক্রমে আমি তার একটি ছবি পায় যেটা সে ও তার বাঙালি প্রেমিক কক্সবাজার হোটেলে ছিল (বিস্তারিত আমার ০৮ তারিখের পোস্ট)। ওই পোস্টে বিভিন্নজন বিভিন্ন মন্তব্য করে, সেখানে আমার একটা মন্তব্য ছিলো এরকম "বাঙালি বা ভিনদেশি বিবাহ করলে নারীবাদ প্রতিষ্ঠা হয় কিনা?" এরপরে বড়ভাই রিটন দাদা (Riton Rings Chakma) আমায় ইনবক্স করেন এভাবে very good Milinda, তুমি যে এত্ত বুঝ আমি (তিনি) জানতাম না, অনেক ধন্যবাদ এরকম মন্তব্য দেওয়ার জন্য। অর্থাৎ তিনি আমার ওই মন্তব্যে মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন, যার ফলে ইনবক্সে অনেক কথা চালাচালি হয়। তিনি আমায় মুখোশধারী, অকর্মা বলে আখ্যায়িত করতে ভুলে যান নি এবং তা অস্বাভাবিক কিছুই নয়। কথার প্রসঙ্গে আমি রিটন দাকে বলি আমি নারীবাদ মানি, নারী অধিকার ও স্বাধীনতা মানি কিন্তু এই জায়গায় আমি মানতে পারিনা আদিবাসী নারীর বাঙালি বিবাহ নিয়ে, হোক সে কোন আদিবাসী পুরুষ বাঙালি নারী বিবাহ করেছে, সেক্ষেত্রে আমি কট্টরপন্থী। কট্টরপন্থী হওয়ার কিছু কারণও আছে। আর হ্যাঁ আপনারা পারলে গতকালকের শেয়ার করা ১৫ মিনিটের বেশি ভিডিও দেখবেন প্রেইমা মারমা কিভাবে চার বছর তার বাঙালির সাথে সংসার জীবন অতিবাহিত করেছিল। আমি সেই দিন বড়ভাই রিটন দা'কে ২ টা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি এভাবে-
১..ধরেন আপনার ছোটবোন বাঙালি বিয়ে করে কোন কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে বা যৌতুকের অভিযোগে ঘরে ফিরলো তখন আপনি কি করবেন?
২.. আর আমি যে মন্তব্যে বলেছি বাঙালি বা ভিনদেশি বিবাহ করলে নারীবাদ প্রতিষ্ঠা হয় কিনা সেখানে নির্দিষ্ট কারোর নাম আমি উল্লেখ করেছি কিনা। শ্রদ্ধেয় দাদা আমার কোন উত্তর না দিয়ে বিভিন্নভাবে এড়িয়ে যান। এরপরে আমি আর কোন কথা বাড়ায় নি, তিনিও তার মতো ছিলেন।
দিন শেষে জানতে পারি স্পার্ক সিক্রেট গ্রুপে রিটন দা বিশেষ ঘোষণা দিয়ে আমায় স্পার্ক এর বিভিন্ন কাজের ওপর নিষিদ্ধ করে বহিষ্কার ঘোষণা করেন। ঘোষণা ছিল এরকম-"সংগঠনের নীতি ভাঙন ও নারীর প্রতি প্রকাশ্যে অসম্মানে অপরাধে স্পার্ক ভলান্টিয়ার মিলিন্দ তনচংগ্যাকে স্পার্ক এর সকল কার্যক্রমে নিষিদ্ধ করা হলো। এবং স্পার্ক নির্বাহী আদেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ নারী দিবসে এটি করতে হলো কারণ যে নারী অসম্মান করে সে স্পার্ক কাজ করার অযোগ্য!! সাহস ছোঁয়াছে!! মিলিন্দকে বহিষ্কার করে পুরুষতান্ত্রিকতা বিনাশ চাই এবং নারীবাদের বিকাশ চাই, মানবিক সমাজ চাই!!" কিন্তু আমার মনে বারেবারে প্রশ্ন রয়ে যায় আমি কোন কথায় তাদের অসম্মান করেছি?
এতে আমার কোন আপত্তি বা আফসোস নেই। তাছাড়া বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে অনেকদিন যাবত স্পার্ক কাজে আমি অংশগ্রহণ করছিনা। তিনি সেখানে উল্লেখ করেছেন আমি নাকি অন্যদের সাথে লেখালেখি করে লাফাচ্ছি। তিনি এও লিখেন আমি নাকি নারী সমাজকে অসম্মান করেছি। আমার বহিষ্কার করে তিনি পুরুষতান্ত্রিকতার বিনাশ প্রত্যাশা করেন। তিনি চাইতে পারেন কোন বাধা নেই, স্পার্ক ফাউন্ডার হিসেবে তার মৌলিক অধিকার রয়েছে। আমি শ্রদ্ধা জানায়, কিন্তু কেউ কোন মন্তব্যে বা কথায় যদি কোন অপরাধও করে তার জন্য আত্মসমর্পণ করার সুযোগ রয়েছে। আমার সাথে কোনরূপ আলোচনা ছাড়ায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, আর বলা হয় আমি নাকি সদুত্তর দিতে পারিনি। যেখানে আমার জবাবই চাওয়ায় হয়নি সেখানে সদুত্তর কথা বলাও অবান্তর। আমার কথার উপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে মানে ব্যক্তি হিসেবে আপনার মতামত অগ্রাহ্য করা হয়েছে। যা মতপ্রকাশের বাধা।
সংগঠনের একজন সদস্য হিসেবে আপনি কোনভাবেই সংগঠন আমার মতামত না নিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আর যেহেতু আমায় দোষারোপ করা হচ্ছে সেহেতু সংগঠন প্রথমে কারণ দর্শাতে বলবে, এভাবে ইনবক্সে মেসেজ দিয়ে নয়। কারণ ইনবক্সের মেসেজ পারসোনাল আর সংগঠনের বিষয়টি সোশাল।
সাধারণ ইনবক্স আলোচনাটা যদি জবাব ভাবা হয় তবে বলার কিছুই নেই। আমি বলছি না যে আমাকে গ্রুপে রাখতে হবে। আমি একদিকে পুরুষতান্ত্রিকতার বিনাশ চাইবো আর নিজের কাজ বা নীতির বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে আপনি তাকে অপমানকর কথা বলবেন তাও কি এক ধরণের পুরুষতান্ত্রিক আচরণ নয়? আমি জানি যে, পুরুষ যেমন নারীদের ওপর পুরুষতান্ত্রিক আচরণ করে তদ্রুপ অনেক সবল ব্যক্তিও দুর্বল ব্যক্তিদের ওপর পুরুষতান্ত্রিকতার আচরণ করে সেটা হতে পারে পুরুষ পুরুষের ওপর, নারী নারীর ওপর। আমি বরঞ্চ বলবো এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সাথী দি'র ব্যক্তি আক্রোশ সাংগঠনিক মাধ্যমে নেওয়ায় হয়েছে। তার মানে স্পার্ক মানেই সাথী দি, আর তার কথায় সব কিছু উঠে বসে। একটা বড় সংগঠন এভাবে তো চলতে পারে না। সবার ভিন্ন মত থাকতেই পারে। আমার ভিন্নমত ছিলো আমি কেন পাহাড়ি মেয়ে বাঙালি বিবাহ করবে তার বিরুদ্ধে যাবো।
সাধারণ ইনবক্স আলোচনাটা যদি জবাব ভাবা হয় তবে বলার কিছুই নেই। আমি বলছি না যে আমাকে গ্রুপে রাখতে হবে। আমি একদিকে পুরুষতান্ত্রিকতার বিনাশ চাইবো আর নিজের কাজ বা নীতির বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে আপনি তাকে অপমানকর কথা বলবেন তাও কি এক ধরণের পুরুষতান্ত্রিক আচরণ নয়? আমি জানি যে, পুরুষ যেমন নারীদের ওপর পুরুষতান্ত্রিক আচরণ করে তদ্রুপ অনেক সবল ব্যক্তিও দুর্বল ব্যক্তিদের ওপর পুরুষতান্ত্রিকতার আচরণ করে সেটা হতে পারে পুরুষ পুরুষের ওপর, নারী নারীর ওপর। আমি বরঞ্চ বলবো এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সাথী দি'র ব্যক্তি আক্রোশ সাংগঠনিক মাধ্যমে নেওয়ায় হয়েছে। তার মানে স্পার্ক মানেই সাথী দি, আর তার কথায় সব কিছু উঠে বসে। একটা বড় সংগঠন এভাবে তো চলতে পারে না। সবার ভিন্ন মত থাকতেই পারে। আমার ভিন্নমত ছিলো আমি কেন পাহাড়ি মেয়ে বাঙালি বিবাহ করবে তার বিরুদ্ধে যাবো।
ও হ্যাঁ, আমি বোধহয় আবার প্রসঙ্গচ্যুত হচ্ছি। দেখলাম রিটন দার পোস্টে আমার অনেক কাছের বন্ধু খুশি হয়েছে, লাভ রিএক্ট করে। সেটা তার পূর্ণ অধিকার আছে, কিন্তু অবাক হয়েছি তারা পর্যন্ত জানতে চাইনি যে মিলিন্দ দোস্তো আসলে কি হয়েছে? এরপরে দেখলাম বিভিন্ন রকমের পোস্ট যা আমাকে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত আর ব্লক ছুড়াছুড়ি। এতেই আমার বুঝতে ভুল হয়নি যে তারমানে আমি যথার্থ বলেছি না হয় জানতে চাওয়া হতো কেন কি এমন কিছু হয়েছে ইত্যাদি। সেখানে আমায় ইঙ্গিত করে পাগলা কুত্তা পর্যন্ত বলা হয়েছে। এটাই হলো বন্ধুত্বের পরিচয়। তারমানে রিটন দা যা বলেছেন তাই সবাই বিশ্বাস করেছে। আর আমার কথার ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে এবং আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে একতরফা দোষারোপ করা হয়েছে। আমার এ বক্তব্যেও হয়তো অনেকে অনেক রকমের আলোলোচনা করবে, বিভিন্ন আইন দেখাবে। দেখাতেই পারেন। কারণ মানুষের বল থাকলে এরকম হয়। আমাকে বলা হয়েছিল মুখোশধারী পাবলিক, মানলাম আমি মুখোশধারী কিন্তু আপনি আপনারা কি? নারী উন্নয়নের নামে আজ এত্ত ফান্ডিং হয় তা আসলে কয়টা নারী সুফল ভোগ করেছে? কয়টা নারীর ধর্ষণ পর হত্যার বিচার পাওয়া গেছে? পাহাড়ে নারী ধর্ষণ, নারী সহিংসতা নিয়ে আলোচনা হতো কিন্ত বিজাতি মানে বাঙালি বিবাহ নিয়ে কথা হয়না। তা কি নারী প্রতি সহিংসতার বাইরে কোন অংশ? অতীত ইতিহাস এত্ত সুখকর ছিলোও না। আমরা সজাতি ভাইরে নারীবাদ নিয়ে কথা বললে আইনের ভয় দেখায় কিন্তু আজ অবধি কোন পাহাড়ি নারী ধর্ষকে এরকম আইনের ভয় দেখানো হয়েছে কিনা জানা নেই। এত্ত যদি আইন শেখানো হয় তবে কেন আইনের জোরে ধর্ষকের বিচার হয়না? আইন কি শুধু আমার মতো কিছু পাবলিকের জন্য নাকি শুধু তা শাসকের মতো পুরুষতান্ত্রিকমনা মানুষদের জন্য?
mongsai79@gmail.com
Comments
Post a Comment
Thanks for you comment