রোহিঙ্গা ইস্যুতে আতংক ইপিজেড থেকে নীরবে পালিয়েছে বহু উপজাতীয় শ্রমিক


Image result for bangladesh chittagong garments staff for chakma
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আতংকিত হয়ে বহু উপজাতীয় শ্রমিক নীরবে পালিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।  ছোট ছোট ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার কারনে চট্টগ্রাম থেকে দলে দলে উপজাতীয় শ্রমিকরা পাহাড়ে চলে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম ইপিজেড থেকে মাত্র সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বহু শ্রমিক গোপনে চলে গেছে। এরা বাড়িওয়ালাদের ভাড়া দেয়নি। দোকানের বকেয়া পরিশোধ করেনি। ব্যাংকের ডিপিএস হিসাব বন্ধ করে রাতের আঁধারে কেটে পড়েছে। চট্টগ্রাম ইপিজেড থেকে প্রতিদিন ভোরে ১০/১২টি করে বাস পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বাড়িওয়ালা ও দোকানদাররা পাওনা আদায়ে পাহারা বসিয়েছে। শ্রমিক পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে নানা উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে আতংকের মধ্যে থাকা ইপিজেড এলাকার বাড়িওয়ালাদের কাছে শ্রমিক পালিয়ে যাওয়া নয়া আতংক হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
দেশের প্রথম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা চট্টগ্রাম ইপিজেডের বিভিন্ন কারখানায় হাজার হাজার উপজাতীয় নারী শ্রমিক কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে চাকমামার্মাত্রিপুরাসহ বিভিন্ন উপজাতীয় তরুণীরা এখানে কাজ করে আসছেন। এসব শ্রমিকরা স্থানীয় বিভিন্ন বাড়িওয়ালাদের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস এবং বিভিন্ন দোকানে মাসিক ভিত্তিতে বকেয়ায় কেনাকাটা করেন। মাস শেষে বেতন পেলে দোকানের বকেয়া ও বাড়িভাড়া পরিশোধ করেন। চট্টগ্রাম ইপিজেডের হাজার হাজার শ্রমিক নগরীর ইপিজেড এলাকার অর্থনীতির বড় নিয়ন্ত্রক। দীর্ঘদিন ধরে ইপিজেড এলাকায় হাজার হাজার উপজাতীয় নারী পুরুষ বসবাস করলেও কোন ধরনের সমস্যা হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনা তুঙ্গে উঠলেও চট্টগ্রাম ইপিজেডসহ কোথাও কোথাও ছোট ছোট ধরনের সমস্যা হয়। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে চট্টগ্রাম ইপিজেডের হাজার হাজার শ্রমিক রাতের আঁধারে পালিয়ে গেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষকেও কোন কিছু বলা সুযোগ পাননি। ফলে হঠাৎ কাজে অনুপস্থিতি কারখানার উৎপাদনে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি করেছে।
গতকাল চট্টগ্রাম ইপিজেড এর একাধিক কারখানা মালিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেনউপজাতীয় মেয়েরা বেশ পরিশ্রমী। তারা শান্তও। তাই বিভিন্ন কারখানায় শত শত উপজাতীয় শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু তাদের বেশির ভাগ চলে যাওয়ায় আমরা সমস্যায় পড়েছি। 

গতকাল ইপিজেড এলাকায় কয়েকজন শ্রমিকের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। রাজন চাকমা নামের এক শ্রমিক বললোকোন সমস্যা নেই। যারা চলে গেছে তারা কেন চলে গেছে তা আমরা জানি না। ভয়ে চলে যেতে পারে। ভয় করার মতো কিছু ঘটেছে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে কল্পনা চাকমা নামের অপর এক শ্রমিক বলেনতেমন কিছু আমরা দেখিনি। তবে তারা কিছু দেখেছে কিনা তাতো আর আমরা বলতে পারবো না। রাজন ও কল্পনা রাতের আঁধারে যাবে না বলেও জানান। এব্যাপারে গতকাল পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের সভাপতি সুমন চাকমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেনবিশ হাজারের মতো শ্রমিক চলে গেছে। তাদেরকে না যাওয়ার জন্য আমরা বিভিন্নভাবে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা শুনেনি।
সুমন চাকমা বলেনএখানে কোন ধরনের সমস্যা নেই। আমাদের নিরাপত্তার কোন অভাব নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আমি ইপিজেড থানার ওসির সাথে বৈঠক করেছি। এনএসআইএসবির কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছি। ব্যারিস্টার সুলতান আহমদ চৌধুরী কলেজের ছাদের উপর প্রায় সাড়ে পাঁচশ’ শ্রমিকের সমাবেশ করেছি। তাদের বুঝিয়েছি যেপালিয়ে যাওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। ঘটবে না। শ্রমিকদের ঘরে ঘরে গিয়ে আশ্বস্ত করেছি। কিন্তু বহু শ্রমিক পালিয়ে গেছে। সুমন চাকমা বলেনআমরা যোগাযোগ করছি। পালিয়ে যাওয়া শ্রমিকদের কেউ কেউ ফিরেও আসছে। সুমন চাকমা বলেনচট্টগ্রাম মহানগরীতে এক লাখের মতো উপজাতীয় নারীপুরুষ বসবাস করছে। নগরীর ইপিজেড ছাড়াও চান্দগাঁও ও অক্সিজেন এলাকায়ও প্রচুর উপজাতীয় নারীপুরুষ বসবাস করেন বলেও তিনি জানান।

Source মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA

Comments