ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে তত্বাবধায়ক সরকার


সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে চলতি মাসেই পটপরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। শপথ নিচ্ছে কেয়ারটেকার সরকার। অনেক চেষ্টা চরিত্র করেও থামাতে ব্যর্থ হয়েছে হাসিনা।
গত ২২ আগস্ট ২০১৭ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সকল বিচারপতিদের সর্বসম্মত একটি রায়ে বর্তমান সংসদের বিনাভোটের ১৫৪ এমপিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে।
এটি কার্যকর হলে বর্তমান সংসদের সাথে সরকারও অবৈধ হয়ে যাবে। জননিরাপত্তার কারনে রায়টি প্রকাশের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা (gag order) দিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অবশ্য রাষ্ট্রপতি ছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি ও কয়েকজন প্রভাবশালী রাষ্ট্রদূত রায় সম্পর্কে অবহিত আছেন।
রায় বাস্তবায়ন নিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনার সরকার এ পর্যন্ত টালবাহানা করে তিন মাস প করে। এই রায় দেয়ার কারনে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অস্ত্রের মুখে দেশত্যাগে বাধ্য করেন বিনাভোটের দখলদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, রায়টি অদ্যাবধি কার্যকর না করা হলেও রায় দেয়ার ১২০ দিন পরে গ্যাগ অর্ডার গ্যাগ অর্ডার আপনা আপনি উঠে যাবে। ফলে সংসদ ও সরকার অবৈধ হয়ে যাবে।
সরকার অবৈধ হওয়ার পরে কেমন করে কেয়ারটেকার সরকার গঠিত হবে তার রূপরেখা রায়ে বলে দেয়া আছে। সে অনুযায়ী চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে শপথ নিবে কেয়ারটেকার সরকার। এসব কারনে বিএনপি তাদের বহুল আলোচিত সহায়ক সরকারের রূপরেখা উপস্থাপন করেনি।
শপথ গ্রহণের পরে দেশের প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা ও বিচার বিভাগ নতুন সরকারের প্রতি অানুগত্য পোষণ করে সার্বিক সহযোগিতা করবে।
গ্যাগ অর্ডার (gag order) কনসেপ্টটি বাংলাদেশে নতুন হলেও পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাপকভাবে এটি ব্যবহৃত হয়। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা গ্যাগ অর্ডার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধি বিধান জেনে বুঝেই রেফারেন্স সহ তা প্রয়োগ করেন।
তবে শেখ হাসিনা ও তার আইন মন্ত্রী আনিসুল হক, এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ও আইন সচিব জহিরুল হক ওরফে পিস্তল দুলালের বাড়াবাড়ির ফলে গত তিনমাস যাবৎ সুপ্রিম কোর্টের উপর সরকারের চরম আক্রোশ ও জুলুম লক্ষ্য করা যায়।
ফলে বিচার বিভাগে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা অনেক কৌশল অবলম্বন করে বিচার বিভাগের মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।
তবে শেখ হাসিনাকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল, রায় বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে কেয়ারটেকার সরকারে তার পছন্দের দু/একজন লোক দিতে। এখন তিনি সুযোগও হেলায় হারিয়েছেন।
তবে এই রায় প্রকাশের আগে শেখ হাসিনা চেষ্টা করছিলো, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তথাকথিত অরফানেজ দুর্নীতির মামলায় সাজা ঘোষণা করে সংসদ ভেঙে দিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচন দিতে।
কিন্তু সে কাজও এখন আর সম্ভব নয়। যদিও এ লক্ষ্য নিয়েই ডিসেম্বরের ৫,৬,৭ তারিখে মামলাটির যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) শেষ করার সময় নির্ধারন করে বিশেষ বিচারক ডঃ আখতারুজ্জামান। কিন্তু আনুষাঙ্গিক সকল বিষয় বেগম খালেদা জিয়া অবহিত আছেন, ফলে তার কৌশলের কাছে ধরাশায়ী হয় সরকারের কৌশল।
অবশেষে যুক্তিতর্কের তারিখ পূনঃনির্ধারিত হয়েছে ১৯-২১ ডিসেম্বর। উল্লেখ করা যায় এই ১৯ ডিসেম্বরই হচ্ছে গ্যাগ অর্ডার শেষ হওয়ার ১২০তম দিন। তাছাড়া ২২ ডিসেম্বর ১৯৭১ প্রবাসী সরকার বাংলাদেশে প্রতাবর্তন করেছিল।
তাই ২২ তারিখেও নতুন সরকার শপথ নিতে পারে। সূত্র জানায়, নতুন সরকার শপথ নেয়ার পরে বেগম জিয়ার মামলার গতিও বদলাবে।
এ ছাড়া হাসিনার দ্বিতীয় চেষ্টা ছিল, দেশে অশান্তি বাধিয়ে তার অনুগত জেনারেলদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আপাতত সরে দাড়ানো। কিন্তু সেনাপ্রধানের ভাই মেয়র আনিসুল হকের রহস্যজনক মৃত্যুর সাথে শেখ হাসিনার সরকারের যোগসূত্র থাকার ফলে সে চেষ্টাতেও সাড়া মিলছে না। তাছাড়া মাঠে নামার জন্য সরকারের শত উস্কানি সত্ত্বেও বিএনপি চেয়ারপারসন যথেষ্ট সতর্ক আছেন। কোনো অবস্থাতেই দেশে হানাহানির পরিবেশ তৈরী হতে দিবেন না।
নতুন সরকার গঠন হলে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দেশে ফিরে আসবেন এবং নিজ দায়িত্বে ফিরে যাবেন।
সূত্র : বিডি পলিটিকো
Source মজার মজার ভিডিও দেখতে নিচে লিংকের ক্লিপ করুণ https://www.youtube.com/channel/UCDUgcFp1WTEUfSzViR9tozA

Comments